পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলাইদহ २० छूलोहे sv०२ আজ এইমাত্র প্রাণটা যাবার জো হয়েছিল। পাটি থেকে শিলাইদহে যাচ্ছিলুম, বেশ পাল পেয়েছিলুম, খুব হুহুঃ শব্দে চলে আসছিলুম। বর্ষার নদী চার দিকে থই থই করছে, এবং হৈ হৈ শব্দে ঢেউ উঠছে, আমি মাঝে মাঝে তাকিয়ে দেখছি এবং মাঝে মাঝে লেখাপড়া করছি। বেলা সাড়ে দশটার সময় গড়ই নদীর ব্রীজ দেখা গেল। বোটের মাস্তুল ব্রিজে বাধবে কি না তাই নিয়ে মাঝিদের মধ্যে তর্ক পড়ে গেল— ইতিমধ্যে বোট ব্রিজের অভিমুখে চলেছে। মাঝিদের আশা ছিল যে আমরা স্রোতের বিপরীত মুখে যখন চলেছি তখন ভাবনা নেই– কারণ, ব্রিজের কাছাকাছি এসেও যদি দেখা যায় যে মাস্তুল বাধবে তখনই পাল নাবিয়ে দিলে বোট স্রোতে পিছিয়ে যাবে। কিন্তু ব্রিজের কাছে এসে আবিষ্কার করা গেল মাস্তুল ঠেকবে এবং সেখানে একটা আওড় ( আবর্ত ) আছে। সেই আওড় থাকাতে সেখানে স্রোতের গতি বিপরীত মুখে হয়েছে। তখন বোঝা গেল সামনে একটি বিপদ উপস্থিত, কিন্তু বেশিক্ষণ চিন্তা করবার সময় ছিল না, দেখতে দেখতে বোট ব্রিজের উপর গিয়ে পড়ল। মাস্তুল মড়মড় ক’রে ক্রমেই কাত হতে লাগল, আমি হতবুদ্ধি মাল্লাদের ক্রমাগত বলছি তোরা ওখান থেকে সর, মাথায় মাস্তুল ভেঙে মরবি না কি ? এমন সময় আর-একটা নোঁকে তাড়াতাড়ি দাড় বেয়ে এসে আমাকে তুলে নিলে এবং রসি নিয়ে আমার বোটটাকে টানতে লাগল। তপসি এবং আর-একজন মাল্লা রসি দাতে কামড়ে সাৎরে ডাঙায় উঠে টানতে লাগল ; সেখানে আরও অনেক লোক জমা হয়ে বোট টেনে তুললে। সকলে ডাঙায় ჯ\96)