পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ8 মার্চ ১৮৯৩ এই মেঘবৃষ্টি পাক কোঠার মধ্যে অতি ভালো, কিন্তু ছোটো বোটটির মধ্যে দুটি রুদ্ধ প্রাণীর পক্ষে মনোরম নয়। একে তো উঠতে-বসতে মাথা ঠেকে, তার উপরে আবার যদি মাথায় জল পড়তে থাকে, তা হলে বেদনার কিঞ্চিৎ উপশম হতেও পারে, কিন্তু আমার 'হর্দশার পেয়ালা একেবারে পুর্ণ হয়ে ওঠে। মনে করেছিলুম বৃষ্টি বাদল এক-রকম ফুরোল, এখন স্নাত পৃথিবীসুন্দরী কিছুদিন রৌদ্রে পিঠ দিয়ে আপনার ভিজে এলোচুল শুকোবে, আপনার সিক্ত সবুজ শাড়িখানি রৌদ্রে গাছের ডালে টাঙিয়ে দেবে, মাঠের মধ্যে মেলে দেবে— বসন্তী আঁচলখানি শুকিয়ে ফুরফুরে হয়ে বাতাসে উড়তে থাকবে। কিন্তু রকমটা এখনও সে ভাবের নয়— বাদলার পর বাদলা, এর আর বিরাম নেই। আমি তো দেখে-শুনে এই ফাল্গুন মাসের শেষভাগে কটকের এক ব্যক্তির একখানি মেঘদূত ধার করে নিয়ে এসেছি। আমাদের পাণ্ডুয়ার কুঠির সম্মুখবর্তী অবারিত শস্য-ক্ষেত্রের উপরে আকাশ যেদিন আর্জস্নিগ্ধ সুনীলবর্ণ হয়ে উঠবে সেদিন বারান্দায় বসে আবৃত্তি করা যাবে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমার কিছুই মুখস্থ হয় না— কবিতা ঠিক উপযুক্ত সময়ে মুখস্থ আবৃত্তি করে যাওয়া একটা পরম সুখ, সেটা আমার অদৃষ্টে নেই। যখন আবশ্বক হয় তখন বই হাৎড়ে সন্ধান করে পড়তে গিয়ে আবশ্বক ফুরিয়ে যায়। মনে করে, মনে ব্যথা লেগে ভারী কঁদিতে ইচ্ছে হয়েছে, তখন যদি দরোয়ান পাঠিয়ে বার্থগেটের বাড়ি থেকে শিশি করে চোখের জল আনতে হত, তা হলে কী মুশকিলই হত। এইজন্যে মফস্বলে যখন >QVう