পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭ জুলাই ১৮৯৩ ছোটোখাটো গ্রাম, ভাঙাচোরা ঘাট, টিনের-ছাত-ওয়ালা বাজার, বঁখারির-বেড়া-দেওয়া গোলাঘর, বঁাশঝাড়, আম কঁঠাল খেজুর শিমুল কলা আকন্দ ভেরেও ওল কচু লতাগুল্ম তৃণের সমষ্টিবদ্ধ ঝোপঝাড় জঙ্গল, ঘাটে-বাধা মাস্তুল-তোলা বৃহদাকার নৌকোর দল, নিমগ্নপ্রায় ধান এবং অর্ধমগ্ন পাটের ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে ক্রমাগত একে বেঁকে কাল সন্ধের সময় সাজাদপুরে এসে পোঁচেছি। এখন কিছু দিনের মতো এইখানেই স্থায়ী হওয়া গেল। অনেক দিন বোটে থাকার পর সাজাদপুরের বাড়িটা বেশ লাগে ভালো— একটা যেন নূতন স্বাধীনতা পাওয়া যায়— যতটা খুশি নড়বার চড়বার এবং শরীর প্রসারণ করবার জায়গা পাওয়া মানুষের মানসিক সুখের যে একটা প্রধান অঙ্গ সেটা হঠাৎ আবিষ্কার করা যায়। আজ প্রাতে মাঝে মাঝে বেশ একটুখানি রৌদ্র দেখা দিচ্ছে, বাতাসটি চঞ্চলবেগে বচ্ছে, ঝাউ এবং লিচু গাছ ক্রমাগত সরসর মরমর করে তুলছে, নানাজাতির পাখি নানা ভাষা নানা সুরে ডেকে ডেকে প্রাতঃকালের আরণ্য মজলিস সরগরম করে তুলেছে। অামি আমাদের দোতলার এই সঙ্গীহীন প্রশস্ত নির্জন আলোকিত উন্মুক্ত ঘরের মধ্যে বসে জানলা থেকে খালের উপরকার নৌকাশ্রেণী, ও পারের তরুমধ্যগত গ্রাম এবং ও পারের অনতিদূরবর্তী লোকালয়ে মৃত্ন কর্মপ্রবাহ নিরীক্ষণ করে বেশ একটুখানি মনের আনন্দে আছি। পাড়াগায়ের কর্মস্রোত খুব বেশি তীব্ৰও নয়, অথচ নিতান্ত নিশ্চেষ্ট নিজীবও নয়। কাজ এবং বিশ্রাম দুই যেন পাশাপাশি মিলিত হয়ে হাত ধরাধরি করে চলেছে। খেয়ানেীকে পারাপার করছে, পান্থর ছাতা হাতে করে খালের צ"ל צ