পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఏ) Se জুলাই brసె\9 এসব গান যেন একটু নিরালায় গাবার মতো। স্বরটা যে মন্দ হয়েছে এমন আমার বিশ্বাস নয়, এমন-কি ভালো হয়েছে বললে খুব বেশি অত্যুক্তি হয় না। ও গানটা আমি নাবার ঘরে অনেক দিন একটু একটু করে স্বরের সঙ্গে সঙ্গে তৈরি করেছিলুম। নাবার ঘরে গান তৈরি করবার ভারী কতকগুলি সুবিধা আছে। প্রথমত নিরালা, দ্বিতীয়ত অন্য কোনো কর্তব্যের কোনো দাবি থাকে না। মাথায় এক টিন জল ঢেলে পাচ মিনিট গুন গুন করলে কর্তব্যজ্ঞানে বিশেষ আঘাত লাগে না— সব চেয়ে সুবিধা হচ্ছে কোনো দর্শক-সম্ভাবনামাত্র না থাকাতে সমস্ত মন খুলে মুখভঙ্গি করা যায়। মুখভঙ্গি ন৷ করলে গান তৈরি করবার পুরো অবস্থা কিছুতেই আসে না। ওটা কিনা ঠিক যুক্তিতর্কের কাজ নয় – নিছক ক্ষিপ্ত ভাব। এ গানট। আমি এখনো সর্বদা গেয়ে থাকি— আজ প্রাতঃকালেও অনেক ক্ষণ গুন গুন করেছি, গাইতে গাইতে গভীর একটা ভাবোন্মাদও জন্মায়। অতএব এটা যে আমার একটা প্রিয় গান সে বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। এখানে আমি একলা খুব মুগ্ধ এবং তদগতচিত্তে অর্ধনিমীলিতনেত্রে গেয়ে থাকি এবং জীবন ও পৃথিবীটা একটি সূর্যকরোজ্জল অতি সূক্ষ্ম অশ্রুবাম্পে আবৃত হয়ে, সাতরঙা ইন্দ্ৰধনু-রেখায় রঞ্জিত হয়ে দেখা দেয় —প্রতিদিনের সত্যকে চিরদিনের সৌন্দর্যের মধ্যে তর্জমা ক’রে দেওয়া যায়– দুঃখকষ্টও আভাময় হয়ে ওঠে। অনতিবিলম্বেই খাজাঞ্চি এক ছটাক মাখন, এক পোয় ঘি ও ছয় পয়সার সর্ষপতৈলের হিসাব এনে উপস্থিত করে । আমার এখানকার ইতিহাস এই-রকম । Sb'W2