পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখি বাক্স, কেবলই বাক্স, ছোটো বড়ো মাঝারি, হাল্কা এবং ভারী, কাঠের এবং টিনের এবং পশুচর্মের এবং কাপড়ের— নীচে একটা, উপরে একটা, পাশে একটা, পিছনে একটা— তখন আমার ডাকাডাকি হাকাহাকি এবং ছুটোছুটি করবার স্বাভাবিক শক্তি একেবারে চলে যায় এবং তখন আমার শূন্তদৃষ্টি শুল্কমুখ এবং দীনভাব দেখলে নিতান্ত কাপুরুষের মতো বোধ হয় ; অতএব আমার সম্বন্ধে ন–র যা মত দাড়িয়েছে তা ঠিক। যাক, তার পরে আমি আর-একটা গাড়িতে গিয়ে শুলুম। সে গাড়িতে আর ফুটি বাঙালি ছিলেন। র্তারা ঢাকা থেকে আসছেন ; তাদের মধ্যে একজনের মাথা টাকে প্রায় পরিপূর্ণ এবং ভাষা অত্যন্ত বাক, তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার পিতা দার্জিলিঙে ছিল ? লক্ষ্মী থাকলে এর যথোচিত উত্তর দিতে পারত। সে হয়তো বলত, “তিনি দার্জিলিঙে ছিল, কিন্তু তখন দার্জিলিঙ বড়ো ঠাও। ছিলেন ব’লে তিনি বাড়ি ফিরে গেছে। আমার উপস্থিতমত এরকম বাংলা জোগালো না । সিলিগুড়ি থেকে দাৰ্জিলিং পর্যন্ত ক্রমাগত স—র উচ্ছ্বাস-উক্তি । ‘ও মা’ ‘কী চমৎকার’ ‘কী আশ্চর্য ‘কী সুন্দর’— কেবলই আমাকে ঠেলে আর বলে, ‘র—, দেখো দেখো। কী করি, যা দেখায় তা দেখতেই হয়— কখনো বা গাছ, কখনো বা মেঘ, কখনো বা একটা তুর্জয় খাদী-নাক-ওয়ালী পাহাড়ী মেয়ে— কখনো বা এমন কত কী যা দেখতে-না-দেখতেই গাড়ি চলে যাচ্ছে এবং স– দুঃখ কচ্ছে যে র— দেখতে পেলে না। গাড়ি চলতে লাগল। ক্রমে ঠাণ্ড, তার পরে মেঘ, তার পরে সর্দি, তার পরে হাচি, তার পরে শাল কম্বল বালাপোষ, মোটা মোজা, পা কনকন, হাত ঠাণ্ডা, মুখ নীল, গলা ভার-ভার এবং ঠিক তার পরেই দাৰ্জিলিং। আবার \) e