পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেল।. বে— অকারণে খুৎ খুং আরম্ভ করলে— বেলা বাড়তে লাগল, যদিও রোদস্থার নেই তবুও গরম বোধ হতে লাগল, কিন্তু সময় আর কাটে না। প্রত্যেক মিনিটকে যেন স্পর্শ করে ঠেলে ঠেলে এগোতে হচ্ছে। সৌভাগ্যক্রমে খানিক দূর গিয়ে । ঘোরতর বৃষ্টি আরম্ভ হল— চার দিক বন্ধ ক’রে র্কাচের জানলার কাছে বসে মেঘবৃষ্টি দেখতে বেশ লাগল। এক জায়গায় একটা বর্ষার নদীর কাণ্ড যে দেখলুম সে আর কী বলব— সে একেবারে ফুলে ফেঁপে, ফেনিয়ে পাকিয়ে ঘুলিয়ে, ছুটে, মাথা খুড়ে, পাথরগুলোর উপরে প’ড়ে আছড়ে-বিছড়ে তাদের ডিঙিয়ে, তাদের চার দিকে ঘুরপাক খেয়ে একটা কাণ্ড করতে লাগল। এরকম উন্মত্ততা আর কোথাও দেখি নি। সোহাগপুরে বিকেলে এসে যখন খেলুম তখন বৃষ্টি থেমেছে— যখন গাড়ি ছাড়লে তখন দেখলুম সূর্য অত্যন্ত রাঙা হয়ে মেঘের মধ্যে অস্ত যাচ্ছে। আমি ভাবছিলুম, খাওয়া-দাওয়া গল্পসল্প খেলাধুলো পড়াশুনোর মধ্যে আর সবার সময় কেবল অলক্ষিতভাবে কেটে যাচ্ছে, সময় তাদের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাচ্ছে— তার অস্তিত্বই তারা টের পাচ্ছে না— আর আমি সময়ের উপরে সাতার কেটে চলেছি, সমস্ত অগাধ সময়টা আমার বুকে মুখে সর্বাঙ্গে লাগছে।... যথাসময়ে হাওড়ায় গাড়ি গিয়ে পৌছল। প্রথমে বাড়ির জমাদার, তার পরে যো—, তার পরে স—, একে একে দৃষ্টিপথে পড়ল। তার পরে সেকেণ্ড, ক্লাসের সেক্রা গাড়ির ছাতের উপরে গুটানো বিছানা, আয়ার দোমড়ানো টিনের বাক্স এবং নাবার টব ( তার মধ্যে ছধের বোতল, লোটা, হাড়ি, টিনপট, পটুলি ইত্যাদি) চাপিয়ে বাড়ি পৌছনো গেল। একটা কলরব, লোকের ভিড়, দারোয়ানদের সেলাম, চাকরদের প্রণাম, সরকারদের ףס\