পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে, তার কোনো অর্থ পাওয়া যায় না। কেবল গোটাকতক পাতিহাসের ওরই মধ্যে একটু ব্যস্ত ভাব দেখা যাচ্ছে, তারা ভারি কলরব করছে, এবং ক্রমাগতই উৎসাহ-সহকারে জলের মধ্যে মাথা ডুবোচ্ছে, এবং তৎক্ষণাৎ মাথা তুলে নিয়ে সবলে ঝাড় দিচ্ছে। ঠিক মনে হচ্ছে, যেন তারা জলের নীচেকার নিগূঢ় রহস্য আবিষ্কার করবার জন্যে প্রতি ক্ষণেই গল বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং তার পরে সবেগে মাথা নেড়ে বলছে ‘কিছুই না’ ‘কিছুই না’। এখানকার দিনগুলো এইরকম বারো ঘণ্টা পড়ে পড়ে কেবল রোদ পোহায়, এবং অবশিষ্ট বারো ঘণ্টা খুব গভীর অন্ধকার মুড়ি দিয়ে নিঃশব্দে নিদ্রা দেয়। এখানে সমস্ত ক্ষণ বাইরের দিকে চেয়ে চেয়ে কেবল নিজের মনের ভাবগুলোকে বসে বসে দোলা দিতে ইচ্ছে করে, তার সঙ্গে সঙ্গে একটু একটু গুনগুন ক’রে গান গাওয়া যায়, মাঝে মাঝে বা ঘুমে চোখ একটু অলস হয়ে আসে। মা যেমন ক’রে শীতকালের সারা বেলা রোদ্বরে পিঠ দিয়ে ছেলে কোলে ক’রে গুনগুন স্বরে দোলা দেয়, সেইরকম । 8ግ