পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sఏ এখনও পথে আছি। ভোর থেকে আরম্ভ ক’রে সন্ধ্যা সাতটাআটটা পর্যন্ত ক্রমাগতই ভেসে চলেছি। কেবলমাত্র গতির কেমন একটা আকর্ষণ আছে— হ ধারের তটভূমি অবিশ্রাম চোখের উপর দিয়ে সরে সরে যাচ্ছে, সমস্ত দিন তাই চেয়ে আছি, কিছুতে তার থেকে চোখ ফেরাতে পারছি নে ; পড়তে মন যায় না, লিখতে মন যায় না, কোনো কিছু কাজ নেই, কেবল চুপ করে চেয়ে বসে আছি। কেবল-যে দৃশ্বের বৈচিত্র্যের জন্তে তা নয়— হয়তো তু ধারে কিছুই নেই, কেবল তরুহীন তটের রেখামাত্র চলে গেছে, কিন্তু ক্রমাগতই চলছে এই হচ্ছে তার প্রধান আকর্ষণ। আমার নিজের কোনো চেষ্টা নেই, পরিশ্রম নেই, অথচ বাইরের একটা অশ্রান্ত গতি মনটাকে বেশ মৃত্ন প্রশান্তভাবে ব্যাপৃত করে রাখে। মনের পরিশ্রমও নেই, বিশ্রামও নেই, এই রকমের একটা ভাব। চৌকিতে বসে বসে অলস অন্যমনস্ক ভাবে পা-দোলানো যেরকম এও সেইরকম ; শরীরটা মোটের উপর বিশ্রাম করছে, অথচ শরীরের যে অতিরিক্ত উদ্যমটুকু কোনোকালে স্থির থাকতে চায় না, তাকেও একটা একঘেয়ে-রকম কাজ দিয়ে ভুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমাদের কালিগ্রামের সেই মুমূর্ষর নাড়ির মতো অতি ক্ষীণস্রোত নদী কাল কোন কালে ছাড়িয়ে এসেছি। সেই নদী থেকে ক্রমে একটা স্রোতস্বিনী নদীতে এসে পড়া গেল। সেটা বেয়ে ক্রমে এমন এক জায়গায় এসে পড়লুম যেখানে ডাঙায় জলে একাকার হয়ে গেছে। নদী এবং তীর উভয়ের আকার-প্রকারের ভেদ ক্রমশই ঘুচে গেছে, তুটি অল্প বয়সের ভাই-বোনের মতো। তাঁর এবং Q\○