পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



২১

সাজাদপুর

ফেব্রুয়ারি ১৮৯১

 এখানকার পোস্ট্‌মাস্টার এক-একদিন সন্ধের সময়ে এসে আমার সঙ্গে এইরকম ডাকের চিঠি যাতায়াত সম্বন্ধে নানা গল্প জুড়ে দেন। আমাদের এই কুঠিবাড়ির এক তলাতেই পোস্ট্‌-আফিস, বেশ সুবিধে, চিঠি আসবামাত্রই পাওয়া যায়। পোস্ট্‌মাস্টারের গল্প শুনতে আমার বেশ লাগে। বিস্তর অসম্ভব কথা বেশ গম্ভীর ভাবে ব’লে যান। কাল বলছিলেন, এ দেশের লোকের গঙ্গার উপর এমনি ভক্তি যে এদের কোনো আত্মীয় মরে গেলে তার হাড় গুঁড়ো ক’রে রেখে দেয়, কোনো কালে গঙ্গার জল খেয়েছে এমন লোকের যদি সাক্ষাৎ পায় তা হলে তাকে পানের সঙ্গে সেই হাড়গুঁড়ো খাইয়ে দেয় আর মনে করে তার আত্মীয়ের একটা অংশের গঙ্গালাভ হল। আমি হাসতে হাসতে বললুম, ’এটা বোধ হয় গল্প।’ তিনি খুব গম্ভীর ভাবে চিন্তা ক’রে স্বীকার করলেন, ‘তা হতে পারে।’

৬০