পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উঠল— বাড়িট সমস্তই একরকম বেঁকেচুরে বিস্ত্রী হয়ে গেল এবং মাঝে মাঝে দেখা গেল, আধখানা মানুষ দেয়ালের মধ্যে গাথা রয়েছে, আধখানা বেরিয়ে । সমস্ত দেখে শুনে মনে হল, এ-সব শয়তানি কাও । বড়দাদাকে বললুম, বড়দা, দেখছেন ব্যাপারটা ! আসুন একবার উপাসনা করা যাক। দালানে গিয়ে খুব একাগ্রমনে উপাসনা করা গেল। বেরিয়ে এসে মনে করলুম, ঈশ্বরের নাম ক’রে তাদের ভৎসনা করব— কিন্তু বুক ফেটে যেতে লাগল, তবু গলা দিয়ে কথা বেরোল না। তার পর কখন জেগে উঠলুম ঠিক মনে পড়ছে না। ভারি অদ্ভূত স্বপ্ন। না ? সমস্ত কলকাতা শহরে শয়তানের প্রাতৃভাব— সবাই তার সাহায্যে বেড়ে ওঠবার চেষ্টা করছে, একটা অন্ধকার নারকী কুঙ্কটিকার মধ্যে সমস্ত শহরের য়ংকর শ্ৰীবৃদ্ধি হচ্ছে। কিন্তু ওর মধ্যে একটু পরিহাসও ছিল— এত দেশ থাকতে জেমুয়িট্রদের ইস্কুলটার উপরেই শয়তানের এত অনুগ্রহ কেন । তার পরে এখানকার স্কুলের মাস্টারের দর্শনাভিলাষী হয়ে এসে উপস্থিত। র্তারা কিছুতেই উঠতে চান না, অথচ আমার আবার তেমন কথা জোগায় না— পাচ মিনিট অন্তর দুই-এক কথা জিজ্ঞাসা করি। তার এক-আধটা উত্তর পাই, তার পরে বোকার মতো বসে থাকি, কলম নাড়ি, মাথা চুলকোই। জিজ্ঞাসা করি, এবার এখানে শস্য কি রকম হয়েছে। স্কুল-মাস্টাররা শস্য সম্বন্ধে কিছুই জানেন না ; ছাত্র সম্বন্ধে যা-কিছু জ্ঞাতব্য বিষয় তা আরম্ভেই হয়ে গেছে। ফের আবার গোড়ার কথা পাড়লুম, জিজ্ঞাসা করলুম, আপনাদের স্কুলে কজন ছাত্র। একজন বললেন, আশি জন ; আরএকজন বললেন, না, এক শো পচাত্তর জন। মনে করলুম, দুজনের ዓ¢