পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( > « v ) পুরবাসিনী জন্মভূমি, তার সমসাময়িক পাঠকমণ্ডলী, তার কবিতা গুলির ঠিক ভাবগ্ৰহ করতে পারবেন, তার যে কতখানি মূল্য সে তাদের জ্ঞানগোচর নয়, অতএব এখনকণর মত এ সমস্ত পথেই ফেলে দেওয়া যাচ্চে, তোমরাও অবহেলা কর আমিও অবহেল করি কিন্তু এরাত্রি যখন পোহাবে তখন “পষ্টারিটি” এসে এগুলি কুড়িয়ে নিয়ে দেশে বিদেশে চলে যাবে । কিন্তু তাতে ঐ জেলে লোকটার মনের আক্ষেপ কি মিটবে ?— যাইহোক, “পষ্টারিটি” যে অভিসারিণী রমণীর মত দীর্ঘরাত্রি ধরে ধীরে ধীরে কবির দিকে অগ্রসর হচ্চে এবং হয়ত নিশিশেষে এসে উপস্থিত হতেও পারে এ সুখকল্পনাটুকু কবিকে ভোগ করতে দিতে কারো বোধহয় আপত্তি না হতেও পারে —সেই মন্দিরের কবিতার ঠিক অর্থটা কি ভাল মনে পড়চেন । বোধহয় সেটা সত্যিকার মন্দির সম্বন্ধে। অর্থাৎ যখন কোণে বসে বসে কতকগুলো কৃত্রিম কল্পনার দ্বারা আপনার দেবতাকে আচ্ছন্ন করে নিজের মনটাকেও একটা অস্বাভাবিক স্বতীব্র অবস্থায় নিয়ে যাওয়া গেছে এমন সময় যদি হঠাৎ একটা সংশয়বজ পড়ে, সেই সমস্ত সুদীর্ঘকালের কৃত্রিম প্রাচীর ভেঙে যায় তখন হঠাৎ প্রকৃতির শোভা, স্বর্য্যের আলোক এবং বিশ্বজনের কল্লোলগান এসে তন্ত্রমন্ত্র ধূপধুনার স্থান অধিকার করে এবং তখন দেখতে পাই সেই যথার্থ আরাধনা এবং তাতেই দেবতার তুষ্টি ।