পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলাইদ। ৮ই মার্চ, ১৮৯৫ । পৃথিবীতে অনেক মহামূল্য উপহার আছে, তার মধ্যে সামান্য চিঠিখানি কম জিনিষ নয়। চিঠির দ্বারা পৃথিবীতে একটা নুতন আনন্দের স্বষ্টি হয়েছে । আমরা মানুষকে দেখে যতটা লাভ করি, তার সঙ্গে কথাবাৰ্ত্ত কয়ে যতটা লাভ করি, চিঠিপত্র দ্বারা তার চেয়ে আরো একটা বেশি কিছু পেয়ে থাকি। চিঠিপত্রে যে আমরা কেবল প্রত্যক্ষ আলাপের অভাব দুর করি তা নয়, ওর মধ্যে আরও একটু রস আছে যা প্রত্যক্ষ দেখাশোনায় নেই। মানুষ মুখের কথায় আপনাকে যতখানি ও যেরকম করে প্রকাশ করে লেখার কথায় ঠিক ততথানি করে না। আবার লেখার যতখানি করে মুখের কথায় ততথানি করতে পারে না । এই কারণে, চিঠিতে মানুষকে দেখবার এবং পাবার জন্য আরো একটা যেন নতুন ইন্দ্রিয়ের স্বষ্টি হয়েছে । আমার মনে হয় যার চিরকাল অবিচ্ছেদে চব্বিশ ঘণ্টা কাছাকাছি আছে, যাদের মধ্যে চিঠি-লেখালেখির অবসর ঘটেনি তারা পরস্পরকে অসম্পূর্ণ করেই জানে। যেমন বাছুর কাছে এলে গোরুর বাটে আপনি দুধ জুগিয়ে আসে তেমনি মনের বিশেষ বিশেষ রস কেবল বিশেষ বিশেষ উত্তেজনায় আপনি সঞ্চারিত হয় অন্ত উপায়ে হবার জো নেই । এই চার পৃষ্ঠা চিঠি মনের ঠিক যে রস দোহন করতে পারে কথা কিম্বা প্রবন্ধে কখনোই তা পারে না । আমার বোধ হয় ঐ লেফাফার মধ্যে একটি সুন্দর মোহ আছে—লেফফাট চিঠির প্রধান অঙ্গ—ওটা একটা মস্ত আবিষ্কার । ജ്ഞ - ജമ്മ