পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
(৩৫)

প্রতিক্ষণেই গলা বাড়িয়ে দিচ্চে এবং তার পরে সবেগে মাথা নেড়ে বল্‌চে, “কিছুই না—কিছুই না!” এখানকার দিনগুলো এইরকম বারো ঘণ্টা পড়ে পড়ে কেবল রোদ পোহায়, এবং অবশিষ্ট বারো ঘণ্টা খুব গভীর অন্ধকার মুড়ি দিয়ে নিঃশব্দে নিদ্রা দেয়। এখানে সমস্তক্ষণ বাইরের দিকে চেয়ে চেয়ে কেবল নিজের মনের ভাবগুলোকে বসে বসে দোলা দিতে ইচ্ছে করে, তার সঙ্গে সঙ্গে একটু একটু গুন গুন করে গান গাওয়া যায়, মাঝে মাঝে বা ঘুমে চোখ একটু অলস হয়ে আসে। মা যেমন করে শীতকালের সারা বেলা রোদ্দরে পিঠ দিয়ে ছেলে কোলে করে গুন্‌ গুন্‌ স্বরে দোলা দেয়, সেই রকম।