পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( 8t ) বল্লে “আমি এই বলে গেলাম, তোমাদের এখান হৎকে যাবার লাগবে ।" আমি ভাবলুম আমার বেদে প্রতিবেশীরা এখনি বুঝি খুটি দরম তুলে পুটুলি বেঁধে ছানা পোনা নিয়ে শুয়োর তাড়িয়ে এখান থেকে প্রস্থান করবে। কিন্তু তার কোন লক্ষণ নেই ; এখনো তার নিশ্চিন্তভাবে বসে বসে বাথারি চিরচে, রাধৃচে বাড়চে, উকুন বাছচে । আমার এই খোলা জানলার মধ্যে দিয়ে নানা দৃশু দেখতে পাই। সবসুদ্ধ বেশ লাগে—কিন্তু একএকটা দেখে ভারি মন বিগৃড়ে যায়। গাড়ির উপর অসম্ভব ভার চাপিয়ে অসাধ্য রাস্তায় যখন গরুকে কাঠির বাড়ি খোচা দিতে থাকে তখন আমার নিতান্ত অসহ বোধ হয়। আজ সকালে দেখছিলুম একজন মেয়ে তার একটি ছোট উলঙ্গ শীর্ণ কালে ছেলেকে এই খালের জলে নাওয়াতে এনেছে—আজি ভয়ঙ্কর শীত পড়েছে— জলে দাড় করিয়ে যখন ছেলেটার গায়ে জল দিচ্চে তখন সে করুণস্বরে র্কাদচে আর কঁপিচে, ভয়ানক কাশীতে তার গলা ঘন ঘন করচে—মেয়েটা হঠাৎ তার গালে এমন একটা চড় মারলে যে আমি আমার ঘর থেকে তার শব্দ স্পষ্ট শুনতে পেলুম। ছেলেট বেঁকে পড়ে হাটুর উপর হাত দিয়ে ফুলে ফুলে কাদতে লাগল, কাশীতে তার কান্না বেধে যাচ্ছিল । তারপরে ভিজে গায়ে সেই উলঙ্গ কম্পান্বিত ছেলের নড় ধরে বাড়ির দিকে টেনে নিয়ে গেল। এই ঘটনাট নিদারুণ পৈশাচিক বলে বোধ হল । ছেলেটা নিতান্ত ছোট—আমার থোকার বয়সী । এরকম একটা দৃষ্ঠ দেখলে হঠাৎ মানুষের যেন একটা Ideal এর উপর আঘাত লাগে—বিশ্বস্তচিত্তে চলুতে চলুতে খুব একটা হুচটু লাগার মত । ছোট ছেলেরা কি ভয়ানক অসহায়—তাদের প্রতি অবিচার করলে তারা নিরুপার কাতরতার সঙ্গে কেঁদে নিষ্ঠুর হৃদয়কে আরো বিরক্ত করে তোলে ; ভালকরে আপনার নালিস জানাতেও পারে না । মেয়েটা শীতে সৰ্ব্বাঙ্গ আচ্ছন্ন করে এসেছে আর ছেলেটার গায়ে একটুকরো কাপড়ও নেই—তার উপরে কাশী—তার উপরে এই ডাকিনীর হাতের মার ! مسسسسسته و هسسه