পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তিয়ণ, ৭ই সেপ্টেম্বর, ১৮৯১ । বালিয়ার ঘাটটি বেশ দেখতে ৷ হই ধারে বেশ বড়বড় গাছ—সবসুদ্ধ খালট দেখে সেই পুণার ছোট নদীটি মনে পড়ে । আমি ভালকরে ভেবেদেখলুম এই খালটাকে যদি নদী বলে জানতুম তাহলে ঢের বেশী ভাললাগ্ৰত । দুই তীরে বড় নরকেল গাছ, আমগাছ এবং নানাজাতীয় ছায়াতরু, ঢালু পরিষ্কার তট সুন্দর সবুজ ঘাস এবং অসংখ্য পুষ্পিত লজ্জাবতী লতায় আচ্ছন্ন ; কোথাও বা কেয়াবন ; যেখানে গাছগুলি একটু বিরল সেইখানথেকে দেখাযায় খালের উচু পাড়ের নীচে একটা অপার মাঠ ধু ধূ করচে, বর্ষাকালে শস্তক্ষেত্র এমনি গাঢ় সবুজ হয়েচে যে ছটি চোখ যেন একেবারে ডুবেযায়–মাঝেমাঝে খেজুর এবং নারকেল গাছের মণ্ডলীর মধ্যে ছোট ছোট গ্রাম ;–এই সমস্ত দৃশু বর্ষাকালের স্নিগ্ধ মেঘাচ্ছন্ন আনত আকাশের নীচে শুমচ্ছায়াময় হয়ে আছে । খালটি তার দুই পরিষ্কার সবুজ শম্পতটের মাঝখানদিয়ে সুন্দরভঙ্গীতে বেঁকেবেঁকে চলেগেছে। মৃদুমৃহ স্রোত ; যেখানে খুব সঙ্কীর্ণ হয়েএসেছে সেখানে জলের কিনারার কাছেকাছে কুমুদবন এবং বড় বড় বাস দেখাদিয়েচে । কিন্তু তবু মনের মধ্যে একটা আক্ষেপ থেকেষার এটা একটা কাট খাল বই নয়—এর জলকলধবনির মধ্যে অনাদি প্রাচীনত্ব নেই, এ কোনো দূর হর্গম জনহীন পৰ্ব্বত গুহার রহস্ত জানে না ; কোনো একটি প্রাচীন স্ত্রী-নাম ধারণকরে অতি অজ্ঞাতকালথেকে দুইতীরের গ্রামগুলিকে স্তন্যদানকার আসেনি—এ কখনো কুলুকুলু করে বলতেপারে না— মেন্‌ মে কাম অ্যাও মেন্‌ মে গো, বাট, আই গো অন ফর এভার । প্রাচীনকালের বড়বড় দীর্ঘীও এরচেয়ে ঢের বেশি গৌরবলাভকরেছে । এরথেকেই ৰেশ বোঝাষার একটা প্রাচীন বড় বংশ অনেক বিষয়ে হীন হলেও কেন এত সমাদর 2