পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলাইদহ, বৃহস্পতিবার, ৯ই জানুয়ারী, >bアおs | দুইএকদিনথেকে এখানকার প্রকৃতি শীত এবং বসন্তের মধ্যে ইতস্ততঃকরচে– সকালে হয়ত উত্তরেবাতাসে জলেস্থলে হী হী ধরিয়েদিয়ে গেল—সন্ধ্যাবেলায় শুক্লপক্ষের জ্যোৎস্নায় দক্ষিণেবাতাসে চারিদিক হ হ করে উঠল । বসন্ত অনেকটা এসে পৌচেছে বেশ বোঝাযাচ্চে । অনেকদিনপরে আজকাল ওপারের বাগানথেকে একটা পাপিয়া ডাকতে আরম্ভকরেচে। মানুষের মনটাও কতকটা বিচলিতহয়ে উঠচে—আজকাল সন্ধ্যা হলে ওপারের গ্রামথেকে গানবাজনার শব্দ শুনতে পাওয়া যায়—এর থেকে বোঝা যাচ্চে, লোকে দরজা জানলা বন্ধকরে মুড়িমুড়ি দিয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়বার জন্তে তেমন উৎসুক নয়। আজ পূর্ণিমারাত—ঠিক আমার বা-দিকের খোলা জানলার উপরেই একটা মস্ত চাদ উঠে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে— বোধহয় দেখৃচে আমি চিঠিতে তারসম্বন্ধে কোন নিন্দে করচি কিনা—সে হয়ত মনে করে, তার জ্যোৎস্নার চেয়ে তার কলঙ্কের কথা নিয়েই পৃথিবীর লোকে বেশি কানাকানি করে । নিস্তব্ধ চরে একটা টিটি পাখী ডাকচে–নদী স্থির—নেীকে নেই, জলের উপর স্থির ছায় ফেলে ওপারের ঘনীভূত বন স্তম্ভিত হয়ে রয়েচে—ঘুমন্ত চোখ খোলা থাকলে যেমন দেখতে হয়, এই প্রকাও পূর্ণিমার আকাশ সেইরকম ঈষৎ বাপুসা দেখাচ্চে । কাল সন্ধ্যা থেকে আবার ক্রমেক্রমে অন্ধকারের স্থত্রপাত হবে, কাল কাছারী সেরে এই ছোট নদীটি পার হবার সময় দেখতে পাব আমার সঙ্গে আমার এই প্রবাসের প্রণয়িনীর একটুখানি বিচ্ছেদ হয়েচে, কাল ষে আমার কাছে আপনার রহস্তময় অপার হৃদয় উদঘাটন করে দিয়েছিল আজ তার মনে মেন একটু সন্দেহ উপস্থিত হয়েচে, যেন তার মনেহচ্চে একেরারে এতখানি আত্মপ্রকাশ কি জ্ঞােল হয়েছিল, তাই হৃদয় আবার একটু একটু করে ৱদ্ধ করচে । বাস্তবিক বিদেশে ক্লিয়অবস্থায় প্রকৃতি বড় কাছাকাছির জিনিয়—আমি সত্যসত্য দু’তিনদিন ধরে মাঝে মাঝে