পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
ছিন্নমুকুল

অনেক চেষ্টাতেও কোন মতেই তাঁহার সে মৌন ভাব ঘুচিল না, তখন তিনি আর বেশী ক্ষণ সেখানে না থাকিয়া বাটী যাইবার জন্য বিদায় গ্রহণ করিলেন।

 বাহিরে আসিয়া প্রমোদ চারিদিকে চাহিয়া দেখিলেন, তাঁহার চক্ষে পৃথিবী আকাশ সকলই শূন্য বোধ হইতে লাগিল। পৃথিবীতে লোক নাই, বৃক্ষ নাই, আলো নাই, আকাশে যেন চাঁদ নাই, তারা নাই, মেঘ নাই—স্বর্গমর্ত্ত্য সকলই যেন শূন্যময় অন্ধকার। প্রমোদ এবার বহির্জ্জগৎ হইতে অন্তরের অন্তরতম প্রদেশ খুঁজিয়া দেখিলেন, দেখিলেন হৃদয়ের মধ্যেও সেই শূন্যময় অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই নাই।

 ইহারই তিন চার দিন পরে কনকের এক পত্রে প্রমোদ অবগত হইলেন সুশীলা সাংঘাতিক পীড়ায় আক্রান্ত। শুনিয়া প্রমোদ সেই রাত্রেই রেলগাড়ীতে এলাহাবাদ যাত্রা করিলেন। গাড়ীতে যামিনীর সহিত তাঁহার সাক্ষাৎ হইল। তাঁহার কাছে শুনিলেন সন্ন্যাসী যামিনীকে কানপুরে ডাকিয়া পাঠাইয়াছেন। তিনি যামিনীকে দুই এক দিনের জন্য এলাহাবাদে থাকিয়া যাইতে অনুরোধ করিলেন। নীরজাকে নিশ্চয় লাভ করিবেন জানিয়া এখন যামিনীরও আর সে বিষয়ে তত ব্যগ্রতা ছিল না। তিনি প্রমোদের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিলেন।


একবিংশ পরিচ্ছেদ

বিভীষিকা

 সুশীলার পীড়ার অগ্রে যে একটি ঘটনা ঘটিয়াছিল, তাহা আমরা এই পরিচ্ছেদে বলিতেছি। কনকের শাস্তির ১২ দিন এখনও ফুরায়