দিন স্থির মাত্র বাকী রহিল। প্রমোদ নব্য তন্ত্রাবলম্বী, তিনি বাল্যবিবাহের বিরোধী, স্ত্রী-শিক্ষার পক্ষপাতী সুতরাং বিবাহ সম্বন্ধেও স্ত্রাপুরুষের স্বাভিমত বিবাহ ইহার মনোনীত। অবশ্য তাঁহার ইচ্ছা জানিলে কনক যে প্রসন্ন হৃদয়ে ইহাতে সম্মত হইবে, এবিষয়ে প্রমোদের বিন্দুমাত্র সংশয় উপস্থিত হয় নাই।
বাড়ী আসিয়া সেরাত্রিতে কনককে তাঁহার কিছু বলা হইল না, পরদিন প্রাতঃকালে বাহির বাটীতে তাঁহার বসিবার কক্ষে তিনি কনককে ডাকিয়া পাঠাইলেন। কনক যখন সেই কক্ষে প্রবেশ করিল তখন প্রমোদ একটী টেবিলের উপরে হস্তে মস্তক রক্ষা করিয়া চিন্তামগ্ন ছিলেন, কি ভাবিতেছিলেন জানি না, কিন্তু চক্ষু সমধিক চঞ্চল ও সমুজ্জ্বল, প্রফুল্ল মুর্ত্তি সমধিক ঔৎসুক্যপূর্ণ প্রফুল্লতাব্যঞ্জক, তিনি যে কোন সুখ-স্বপ্ন দেখিতেছিলেন তাহাতে আর কোন সন্দেহ নাই। কনক আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল—
“দাদা আমাকে ডেকেছ?” প্রমোদ হাসিয়া বলিলেন—“হুঁ। বোস্, তোর সঙ্গে অনেক কথা আছে।”
কনক টেবিলের নিকট চৌকিতে বসিয়া আগ্রহ সহকারে জিজ্ঞাসা করিল “কি কথা?”
প্র। একটা বড় সুখের কথা। আচ্ছা আন্দাজ কর দেখি।
কনক অনেক ভাবিয়া বলিল “না পারছি নে, তুমি ভাই বল।”
প্র। বল্লে কি পুরস্কার দিবি?
ক। যা চাও তাই দেব, তুমিতো আগে বল।
কনকের কৌতূহল দেখিয়া প্রমোদ অনেকক্ষণ এ কথা ও কথা কহিয়া তাহাকে অনেক জ্বালাইয়া অবশেষে বলিলেন—“একটী বেশ ভাল বরের সঙ্গে তোর সম্বন্ধ করেছি, শীঘ্র বিয়ে হবে, কেমন সুখবর কিনা।” শুনিয়া কনক চমকিত হইল, তাহার শোণিত বেগে বহিতে লাগিল, মুখ