মাত্র ভাবনা। চিরকাল পুড়ে মরি সেও স্বীকার কিন্তু তোমার ছায়াকেও আমা থেকে তিলমাত্র অমঙ্গল যেন স্পর্শ না করে। আমি এখনি চলে যাব, একটিবার শুধু তোমার নিজের মুখে আমার শেষ ভাগ্য শুনতে এসেছি। কনক, আমাদের কি সত্যই আর কোন আশা নেই? তোমার দাদা কেন এ বিবাহে অসম্মত?”
কনক অশ্রু মুছিয়া বিকম্পিত স্বরে কহিল, “তিনি তোমাকে শত্রু মনে করেন?”
হি। আমাকে শত্রু মনে করেন, আমি তাঁর কি করেছি?এ ভুল বিশ্বাস কি কোন রকমে ঘোচান যায় না?
কনক নীরজার কাছে এ সম্বন্ধে যাহা কিছু শুনিয়াছিল তাহাই সংক্ষেপে বলিয়া বলিল, “তিনি যে তোমার উপর প্রসন্ন হবেন তা ত মনে হয় না। বিশেষ তাঁর যখন একান্ত ইচ্ছা আমার যামিনীনাথের সঙ্গে বিয়ে হয়।”
হিরণকুমার উন্মত্তের মত বলিলেন “কনক— সত্যিই কি তবে তুমি আর আমার হবে না? আমার এত আশা এত আকাঙ্ক্ষা সব মিথ্যা! তুমি অন্যের—
কনক অটল স্বরে কহিল “না আমি অন্যের নই, দাদার অমতে আমি কাজ করতে পারব না, কিন্তু দাদার সহস্র অত্যাচারেও আমি অন্যকে আত্মসমর্পণ করব না।”
কাহারও আর কথা কহিবার শক্তি রহিল না, দুজনে কেহ কাহাকেও স্পর্শ না করিয়া দুজনে কেহ কাহারও সহিত বাক্যালাপ না করিয়া দূরে দূরে দুজনের মুখের দিকে চাহিয়া দুজনের হৃদয় স্পন্দন এক বলিয়া অনুভব করিতে লাগিলেন। হিরণকুমার বলিলেন “কনক, আমরা মনে মনে দু’জনকে দু’জনে ভালবাসি, হৃদয়ে হৃদয়ে আমাদের বিবাহ হ'য়ে গেছে, কনক, তোমার দাদার মতের বিরুদ্ধে কি আমাদের বিবাহ হয় না?”