প্র। ঐ ধ্রুবতারা! আপনি সব নক্ষত্রের নাম জানেন?
নী। আপনি জানেন না? ঐ দেখুন সপ্তর্ষি। চলুন এখন আপনাকে আর একটি জিনিষ দেখাই। ঐ ঝুমকো লতামণ্ডপের মধ্যে একটি খাঁচায় পাতার বিছানা করে একটি বউকথাকওকে শুইয়ে রেখেছি দেখিয়ে আনি।”
প্র। বউকথাকওটি খুব পোষ মেনেছে?
নী। না, এটি পোষা নয়। আহা, আজ সকালে ঐ ছানাটি গাছ থেকে পড়ে গিয়েছিল, তাই তাকে অমন যত্নে রেখেছি। পাখী খাঁচায় ধরে রাখতে আমার মায়া করে,—ছানাগুলি কুড়িয়ে মানুষ করি, বড় হলে উড়িয়ে দেই। স্বাধীনভাবে তারা কত সুখী।
প্র। চলুন, কিন্তু ভয় হয় পাছে আপনার পিতা ডাকলে শুনতে না পান।
প্রমোদ নীরজার সঙ্গে সঙ্গে চলিলেন, নীরজা সেই নিস্তব্ধ নৈশ-গগন চমকিত করিয়া গান গাহিতে গাহিতে পথ দেখাইয়া চলিল—
নিঃঝুম নিঃঝুম গম্ভীর রাতে,
কম্পত পল্লব দক্ষিণ বাতে,
পেখল সজনি সতিমির রজনী,
অম্বরে চন্দ্র ন তারকা ভাতে,
ঝিল্লি-ধ্বনি-কৃত, বন পরিপূরিত,
কলয়ত জাহ্নবী মৃদুল প্রপাতে।
বালিকা থামিয়া বলিল “আমি বাঙ্গলা গান শিখতে বড় ভালবাসি, বাঙ্গালী যাত্রী এলেই আমি গান শিখি। আপনি গাইতে পারেন না?”
প্রমোদ সে কথায় উত্তর না করিয়া বলিলেন “আপনি যে গানটি এখন গাইলেন ওকি কোনও যাত্রীর কাছে শিখেছেন?