পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ
৭৩

 প্রমােদ একটু বিপদে পড়িয়া বলিলেন “মহাশয়, বন্ধু বটে, কিন্তু আমার সঙ্গে তাঁর”—

 সন্ন্যাসী প্রমােদকে কথা শেষ করিতে না দিয়াই বলিলেন “তােমার আর কিছুই বলবার প্রয়ােজন নেই। আমি এখনই তােমার বন্ধুর বাড়ী যাচ্ছি।”

 তিনি ভবানীপুরে একজন আত্মীয় ব্যক্তির সহিত নীরজার সম্বন্ধে পরামর্শ করিতে যাইতেছিলেন, কিন্তু তাহার সন্ধান পাইয়া আর সেখানে না গিয়া, যামিনীনাথের বাড়ীই যাত্রা করিলেন।


ষোড়শ পরিচ্ছেদ

হাসিমুখে বিষাদ

 সেই অপরাহ্নে যামিনীনাথের বাটীর অন্তঃপুরস্থ উদ্যানের বৃক্ষলতাসমাকুল একটি নিভৃত প্রান্ত হইতে নীরজা বাহির হইল। নীরজার বাম হস্তে একটি কাকাতুয়া, তাহার সহিত কথা কহিতে কহিতে সে উদ্যানস্থিত সরােবরতীরে আসিয়া দাঁড়াইল। তখন স্বচ্ছসলিলা সরসী মৃদু সমীরস্পর্শে তলতল ঢলঢল করিয়া কাঁপিতেছিল; কাঁপিয়া কুমুদদল কাঁপাইয়া মৃদু মৃদু কল্লোলে তট চুম্বন করিতেছিল। তীরস্থিত একটি কামিনী বৃক্ষের অসংখ্য ফুলরাশি হইতে মধে, মধ্যে দুই একটি বায়ুস্খলিত কুসুম চৌদিকে বাস বিকীর্ণ করিতে করিতে সরােবরে আত্ম সমর্পণ করিতেছিল; নীরজা গান গাহিতে গাহিতে এক একবার সেই স্রোতসঞ্চালিত সুখ-ক্রীড়মান কুসুম রাশির প্রতি দৃষ্টিপাত