পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তদশ পরিচ্ছেদ
৮১

বিস্ময়-বিস্ফারিত নেত্রে বলিলেন “মহাশয় কি বলছেন? আমি নীরজাকে আপনার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছি!”

 স। নইলে এখনো নীরজা এখানে কেন? যদি যথার্থ ই দস্যুহস্ত হতে রক্ষা করতে, তা’হলে তাকে তার পিতার নিকট পৌঁছিয়ে না দিয়ে এখানে রাখবে কেন? পাষণ্ড, পামর, নীরজা এখনো ত দস্যুহস্তগত।”

 যা। “কি আশ্চর্য্য! আমার এ উত্তম পুরস্কারই বটে! কোথায় নীরজার জীবনদান করলেম বলে আপনার প্রিয়পাত্র হব, না আপনি আমাকেই অবিশ্বাস করছেন। নীরজাকে এখানে এনে অবধি আপনাকে কত চিঠিই লিখেছি তার ঠিক নেই—এখন বুঝতে পারছি, সেখানে না থাকায় আপনি কোন চিঠিই পান নাই, কিন্তু সেটাত আর আমার দোষ নয়।

 স। “আমি বন্দবস্ত করে এসেছিলেম আমার নামে যে কোন পত্র আসুক আমি যেখানে থাকি পাব। কিন্তু এ পর্য্যন্ত তো কানপুর থেকে একখানি পত্রও ফেরত আসেনি।”

 যা। তবে কি গোল হয়েছে কি করে বলব—কিন্তু সে জন্যে কি আপনি আমাকে দোষী করবেন? যদি বিশেষ কাজে কলকাতায় না আটকা পড়তেম তো আমি নীরজাকে নিশ্চয়ই এতদিন নিজে সঙ্গে করে কানপুরে রেখে আসতেম। যা হ’ক আমার এ উত্তম পুরস্কারই বটে!” যামিনীর কথা শুনিয়া তাহার দোষের প্রতি সন্ন্যাসী বিচলিতমনা হইলেন!যামিনী তাহা বুঝিয়া আবার ঈষৎ হাস্য করিয়া বলিলেন—

 “মহাশয় আপনার কিসে সন্দেহ হ’ল আমি নীরজাকে হরণ করেছি, বড় জানতে ইচ্ছা হচ্ছে। কেন না ভবিষ্যতে কারো উপকার করতে গেলেও ভেবে চিন্তে অতি সাবধানে করতে হবে; উপকার