পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুকুট ২৩ জায়গাতেই খেলে, কেবল তীরের আগায় খেলে না ; তার কারণ, বুদ্ধি তেমন সূক্ষ্ম নয় ।” ইন্দ্রকুমার ভারি চটিয়া একটা উত্তর দিতে যাইতেছিলেন । ইশা খ। বুঝিতে পারিয়া দ্রুত সরিয়া গিয়া রাজধরকে বলিলেন, “কুমার, এবার তুমি লক্ষ্যভেদ করে, মহারাজা দেখুন।” রাজধর বলিলেন, “আগে দাদার হউক ৷” ইশা খাঁ রুষ্ট হইয়া কহিলেন, “এখন উত্তর করিবার সময় নয় । আমার আদেশ পালন করে।” রাজধর চটিলেন, কিন্তু কিছু বলিলেন না। ধনুর্বাণ তুলিয়া লইলেন। লক্ষ্য স্থির করিয়া নিক্ষেপ করিলেন । তাঁর মাটিতে বিদ্ধ হইল। যুবরাজ রাজধরকে কহিলেন, “তোমার বাণ অনেকটা নিকটে গিয়াছে ; আর-একটু হইলে বিদ্ধ হইত।” রাজধর অমানবদনে কহিলেন, “লক্ষ্য তো বিদ্ধ হইয়াছে, দূর হইতে স্পষ্ট দেখা যাইতেছে না।” যুবরাজ কহিলেন, “না, তোমার দৃষ্টির ভ্রম হইয়াছে, লক্ষ্য বিদ্ধ হয় নাই ।” রাজধর কহিলেন, “হা, বিদ্ধ হইয়াছে । কাছে গেলেই দেখা যাইবে।” যুবরাজ আর-কিছু বলিলেন না। 轉 অবশেষে ইশা খার আদেশক্রমে ইন্দ্রকুমার নিতান্ত অনিচ্ছাসহকারে ধনুক তুলিয়া লইলেন । যুবরাজ র্তাহার কাছে গিয়া কাতরস্বরে কহিলেন, “ভাই, আমি অক্ষম— আমার উপর রাগ করা অন্যায়– তুমি যদি আজ লক্ষ্যভেদ করিতে না পার, তবে তোমার ভ্ৰষ্টলক্ষ্য তীর আমার হৃদয় বিদীর্ণ করিবে ইহা নিশ্চয় জানিয়ে ।” ইন্দ্রকুমার যুবরাজের পদধূলি লইয়া কহিলেন, “দাদা, তোমার আশীর্বাদে আজ লক্ষ্য ভেদ করিব, ইহার অন্যথা হইবে না।” ইন্দ্রকুমার তীর নিক্ষেপ করিলেন, লক্ষ্য বিদ্ধ হইল। বাজনা বাজিল। চারি দিকে জয়ধ্বনি উঠিল। যুবরাজ যখন ইন্দ্রকুমারকে