পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহসের পুরস্কার ગ তাহাকে ধরিল। বেচারার এত কষ্টের নৌকা ভাসানো হইল না— এত দিনের আশা নিমূল হইল । এই কথা কী করিয়া নেপোলিয়নের কানে উঠিল । নেপোলিয়ন সমুদ্রের ধারে গিয়া সমস্ত দেখিলেন। তিনি সেই ইংরেজ বালককে বলিলেন, “তোমার এ কিরকম সাহস । এই খানকতক কাঠ আর গাছের ডাল বেঁধে তুমি সমুদ্র পার হতে চাও? দেশে তোমার কেই-বা অাছে।” সেই ইংরেজ বলিল, “আমার মা আছেন। আমার মাকে অনেক দিন দেখি নি, মাকে দেখবার জন্য প্রাণ বড়ো আকুল হয়েছে।” বলিতে বলিতে তাহার চোখ ছলছল করিয়া আসিল । নেপোলিয়ন তৎক্ষণাৎ বলিলেন, “আচ্ছা, মায়ের সঙ্গে তোমার দেখা হবে, আমি দেখা করিয়ে দেব। যে ছেলে এমন সাহসী তার মা না-জানি কত মহৎ ।” নেপোলিয়ন তাহাকে একটি মোহর দিলেন এবং নিজের জাহাজে করিয়া তাহাকে ইংলণ্ডে পাঠাইয়া দিলেন। দুঃখে পড়িলেও সেই মোহরটি সে কখনো ভাঙায় নাই, নেপোলিয়নের দয়া মনে রাখিবার জন্য সেই মোহরটি সে চিরদিনই কাছে রাখিয়াছিল । দাৰ্জিলিং-যাত্রা যখন তিনটার সময় শিয়ালদহে দার্জিলিঙের গাড়িতে উঠিলাম তখন আমার মনে বড়ো আনন্দের উদয় হইল। উচু জায়গার মধ্যে— মানিকতলার খাল কাটার সময়ে মাটি জমা হইয়াছিল, তাহাই দেখিয়াছি। আর অত্যস্ত মোট রামশঙ্কর কামারকে পাড়ার লোকেরা পর্বত্ত বলিয়া থাকে, তাহাকেও দেখিয়াছি— ইহা হইতে হিমালয়ের ভাব যতটা পাওয়া যায় তাহা পাওয়া গিয়াছে। কিন্তু