পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Φύρ ছুটির পড়৷ এবার স্বয়ং হিমালয়ে সশরীরে যাইতেছি, হিমালয় পর্বত সশরীরে স্বচক্ষে দেখিব, এ কথা যতই মনে হইতে লাগিল, আনন্দে আমার বক্ষস্থল হিমালয় অপেক্ষ ফুলিয়া উঠিতে লাগিল । সন্ধ্যা সাতটার সময় দামুকদিয়া স্টেশনে পৌছিলাম। দাৰ্জিলিংযাত্রীদের এই স্টেশনে নামিতে হয় এবং পদ্মানদী পার হইয়া অন্য এক ট্রেনে চড়িতে হয়। আমরা যখন এখানে আসিয়া পৌছিলাম তখন মুষলধারে বৃষ্টি হইতেছে। জাহাজে উঠিলাম। নদী পার হইতে পনেরো মিনিটের কিছু বেশি লাগে। পার হইয়া দেখি যে, সারাঘাট স্টেশনে অন্ত এক ট্রেন প্রস্তুত আছে। তাহাতে উঠিয়া পড়িলাম। এখানকার গাড়িগুলি ছোটো ছোটো । ট্রেনের ৰাকানিতে আমার বেশ নিদ্রা হয়, সুতরাং রাত্রিটি বেশ কাটিয়া গেল। ভোর ছয়টার কিছু পূর্বে স্টেশনে গাড়ি থামিল। আমরা চা পান করিয়া লইলাম। এক ঘণ্টা পরে শিলিগুড়ি স্টেশনে গাড়ি খামিল । এই স্থান হইতে কলের ট্রামগাড়িতে চড়িয়া পাহাড়ে উঠিতে হয়। এখানে দিব্য আহারের স্থান আছে। ট্রামগাড়ি প্রস্তুত আছে, তাহাতে চড়িলাম। এ স্থানের ট্রামগাড়িগুলি নূতন ধরনের, খান-আঠারো গাড়ির মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর গাড়িগুলি চতুর্দিকে শার্সি দ্বারা ঢাকা, বাকি কতকটা চিৎপুর রোডের ট্রামগাড়ির মতো ফাকা । এই ফাকা গাড়িতে চড়িলে চারি দিকের দৃশ্য বেশ ভালো দেখা যায়, সুতরাং আমরা তাহাতেই বসিলাম । শিলিগুড়িতে পৌছিয়া যাত্রীদের গরম কাপড় পরিতে হয়। আমি কাপড় ছাড়িলাম। ট্রামগাড়ি ছাড়িল । চারি দিকে ধানের ক্ষেত্র, মধ্যে মধ্যে চা-ক্ষেত্রের সুন্দর শোভা দেখিতে দেখিতে গাড়ি পাহাড়ের নীচে আসিল । এইবার পাহাড়ের উপরে উঠিতে আরম্ভ করা গেল। ঘন এক শালবনের মধ্য দিয়া গাড়ি চলিয়াছে, চারি দিকে বড়ো বড়ো শালগাছ ভিন্ন আর কিছুই দেখা যায় না। কতক্ষণ পরে গাড়ি ঘুরিয়া এক ফঁাক জায়গায় আসিল ; তখন নীচের দিকে