পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●ゲ ছুটির পড়া ইন্দ্রকুমার ক্রুদ্ধ হইয়া বলিলেন, “যুদ্ধ। যুদ্ধ তুমি কোথায় করিলে ! এ পুরস্কার তোমার নহে। এ মুকুট যুবরাজ পরিবেন।” রাজধর কহিলেন, “আমি জয় করিয়া আনিয়াছি ; এ মুকুট আমি পরিব।” যুবরাজ কহিলেন, “রাজধর ঠিক কথা বলিতেছেন, এ মুকুট রাজধরেরই প্রাপ্য ।” ইশা খী চটিয়া রাজধরকে বলিলেন, “তুমি মুকুট পরিয়া দেশে যাইবে । তুমি সৈন্তাধ্যক্ষের আদেশ লঙ্ঘন করিয়া যুদ্ধ হইতে পালাইলে, এ কলঙ্ক একটা মুকুটে ঢাকা পড়িবে না। তুমি একটা ভাঙা হাড়ির কানা পরিয়া দেশে যাও, তোমাকে সাজিবে ভালো।” রাজধর বলিলেন, “র্থ-সাহেব, এখন তো তোমার মুখে খুব বোল ফুটিতেছে— কিন্তু আমি না থাকিলে তোমরা এতক্ষণে থাকিতে কোথায় ?” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “যেখানেই থাকি, যুদ্ধ ছাড়িয়া গর্তের মধ্যে লুকাইয়া থাকিতাম না।” যুবরাজ বলিলেন, “ইন্দ্রকুমার, তুমি অন্যায় বলিতেছ। সত্য কথা বলিতে কি, রাজধর না থাকিলে আজ আমাদের বিপদ হইত।” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “রাজধর না থাকিলে আজ আমাদের কোনো বিপদ হইত না । রাজধর না থাকিলে এই মুকুট আমি যুদ্ধ করিয়া আনিতাম– রাজধর চুরি করিয়া আনিয়াছে। দাদা, এ মুকুট আনিয়া আমি তোমাকে পরাইয়া দিতাম, নিজে পরিতাম না।” যুবরাজ মুকুট হাতে লইয়া রাজধরকে বলিলেন, “ভাই, তুমিই আজ জিতিয়াছ। তুমি না থাকিলে অল্প সৈন্য লইয়া আমাদের কশ বিপদ হইত জানি না। এ মুকুট আমি তোমাকে পরাইয়া দিতেছি।” বলিয়া রাজধরের মাথায় মুকুট পরাইয়া দিলেন । ইন্দ্রকুমারের বক্ষ যেন বিদীর্ণ হইয়া গেল— তিনি রুদ্ধকণ্ঠে বলিলেন, “দাদা, রাজধর শৃগালের মতো গোপনে রাত্রিযোগে চুরি