পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছুটির পড়া و ه সাহায্যে আমরা কী করিয়া দেখিতে পাই তাহা বলা আবশ্যক । সূর্য উদয় হইলে সূর্যকিরণের ঢেউ প্রত্যেক বস্তুতে আঘাত করে এবং তাহাদের নিকট হইতে ফিরিয়া আসিয়া তাহারাই আবার আমাদের চক্ষুতে আসিয়া পতিত হয়। আমাদের চক্ষে প্রবেশ করিয়া ঢেউগুলি চক্ষের স্বায়ুগুলিকে যখন চঞ্চল করে তখন প্রত্যেক বস্তুর আকার আমরা মস্তিষ্কে ধারণা করিতে পারি। কতকগুলি বস্তু আছে, তাহারা সেই ঢেউগুলিকে আমাদের চক্ষে ফিরাইয়া না দিয়া বেশির ভাগ ঢেউ তাহাদের ভিতর দিয়া প্রবেশ করিতে দেয়, যেমন কাচ । সেই হেতু এই শ্রেণীর বস্তুগুলিকে আমরা স্বচ্ছ পদার্থ বলিয়া থাকি। আবার এমন কতকগুলি ধাতু আছে যাহারা সেই ঢেউগুলিকে তাহাদের মধ্যে কতকটা প্রবেশ করিতে দেয় ও অধিকাংশই আমাদের চক্ষে ফিরাইয়া দেয়, যেমন উজ্জল রৌপ্য, ইস্পাত ইত্যাদি। দর্পণে যখন মুখ দেখি তখন সূর্যের ঢেউ প্রথমে আমাদের মুখে আসিয়া পড়িয়া আয়নায় ফিরিয়া যায়, পুনরায় তাহারা আয়ন হইতে ফিরিয়া আসিয়া যখন আমাদের চক্ষের তারার মধ্যে প্রবেশ করে তখন নিজের মুখ নিজে দেখিতে পাই । সূর্যকিরণের আর-একটি গুণ আছে । ধরিতে গেলে পৃথিবীতে কোনো জিনিসের রঙ নাই। সূর্যকিরণ হইতেই সকলে নানা রঙ পাইয়া থাকে। সূর্যকিরণের মধ্যে যে রামধনুকের সাতটা রঙ আছে, এ কথা সকলেই জানেন । কিন্তু সূর্যকিরণের সেই সাতটা রঙ কেমন ভাবে আছে সেটা বলিলে বোধ করি কাহারে বিরক্তি বোধ হইবে না । আমরা পূর্বে সূর্যকিরণকে তরঙ্গ বলিয়াছি। এখন বুঝিতে হইবে, অনেকগুলি ভিন্ন আয়তনের তরঙ্গ একত্রে সার বাধিয়া আসিতেছে । সাতটা রঙ সাতটা বিভিন্ন আয়তনের ঢেউ । লাল রঙের ঢেউগুলি সকলের চেয়ে বড়ো । কিন্তু ঢেউগুলি আয়তনে পৃথক হইলেও তাহাদের গতিবেগের পরিমাণে কোনো ভেদ নাই, সব ঢেউই প্রতি সেকেণ্ডে ৯৩০০০ ক্রোশ চলে । যে ঢেউগুলি দ্বারা ভায়লেট নামক