পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সূর্যকিরণের কার্য གི། བདེ་ এক প্রকার বেগুনি রঙের আলো হয় তাহারা সর্বাপেক্ষা ছোটো ও কার্যক্ষম । তা ছাড়া কমলালেবুর রঙ, সবুজ রঙ, নীল রঙ, ঘোর নীল রঙের ঢেউগুলি ভিন্ন আয়তন ধরিয়া আছে। এক ইঞ্চি জায়গায় যদি ৩৯০০০ লাল রঙের ঢেউ থাকে তা হলে সেই জায়গায় ৫৭০ ০০ বেগুনি রঙের ঢেউ থাকে, ইহা পরীক্ষা দ্বারা জানা গিয়াছে । এখন তোমরা জিজ্ঞাসা করিতে পারো যে, সূর্যকিরণের এই-সকল বিভিন্ন রঙের ঢেউগুলি যখন আমাদের চক্ষে আঘাত করিতেছে তখন আমরা রঙিন আলো সর্বদা দেখিতে পাই না কেন । নিয়মিত মাপে লাল, কমলালেবুর রঙ, হলদে, সবুজ, নীল, ঘোর নীল ও বেগুনি এই কয়টি রঙ যদি একত্রে মিশ্রিত করা যায় তাহা হইলে সাদা রঙ দাড়াইবে । পরীক্ষা করিতে চাও তো একটি গোল মোটা কাগজে এই রঙগুলি ক্রমান্বয়ে সারি সারি মাখাইয়া খুব জোরে ঘুরাইবে, সেই রঙগুলির পরিবর্তে কেবল সাদা রঙ দেখাইবে । কেবল সূর্যের রঙের মতো বিশুদ্ধ রঙ এখানে পাওয়া যায় না বলিয়া যতটা সাদা হওয়া উচিত ততটা সাদা দেখায় না । সেইরূপ সূর্যের আলোকের বিভিন্ন রঙের ঢেউগুলি একত্রে মিলিয়া এক সময়েই তোমার চক্ষে আঘাত করিতেছে বলিয়া তুমি এই শুভ্র আলোক দেখিতে পাইতেছ। নানা দ্রব্য নানা রঙের — ইহার অর্থ কী। তাহার কারণ এই, এক-একটা জিনিস সূর্যকিরণের এক-একটা রঙের ঢেউ আপনার মধ্যে গ্রহণ করিতে পারে না । মনে করে, গোলাপফুল সূর্যালোকের সমুদয় বর্ণ গ্রহণ করিতে পারে, কেবল লাল রঙটা পারে না ; এইজন্য লাল রঙ গোলাপ ফুলের কাছ হইতে ফিরিয়া আসে, সুতরাং লাল রঙটাই আমরা দেখিতে পাই, আর কোনো রঙ দেখিতে পাই না । তাই গোলাপকে লাল বলি । গাছের পাতাগুলি সেইরূপ সূর্যের অন্ত রঙের ঢেউ-সকল আপনাদের মধ্যে ধরিয়া রাখিয়া কেবল সবুজ রঙের ঢেউ ফিরাইয়া দেয়, সেই ঢেউ ফিরিয়া আসিয়া আমাদের চক্ষে আঘাত করিলে আমরা পাতাগুলির সবুজ রঙ দেখিতে পাই। সাদা