পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮২ ছুটির পড়া 疊 বাবার মতো যাব না মা, বিদেশে কোন কাজে । মা, যদি হও রাজি, বড়ো হলে আমি হব খেয়াঘাটের মাঝি । ন্যায়ধর্ম প্রসিয়ার ‘মহৎ’-উপাধিপ্রাপ্ত সম্রাট ফ্রেডরিক রাজধানী হইতে কিছু দূরে একটি বাগানবাড়ি নির্মাণের সংকল্প করিয়াছিলেন । যখন সমস্ত বন্দোবস্ত স্থির হইয়া গেল তখন শুনিতে পাইলেন যে, একজন কৃষকের একটি শস্য চূর্ণ করিবার জাতকিল-গৃহ মাঝে পড়াতেই তাহার বাগান সম্পূর্ণ হইতে পারিতেছে না। বিস্তর টাকার প্রলোভনেও কৃষক তাহার গৃহ উঠাইয়া লইতে রাজি হয় নাই শুনিয়া সম্রাট কৃষককে ডাকাইয়া পাঠাইলেন । জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি এত টাকা পাইতেছ, তবু কেন ঘর ছাড়িতেছ না।” কৃষক উত্তর করিল, “ইহা অামার পৈতৃক গৃহ। ঐখানেই আমার পিতা তাহার জীবন নির্বাহ করিয়াছেন ও মরিয়াছেন এবং ঐখানেই আমার পুত্রের জন্ম হইয়াছে, আমি উহা বেচিতে পারিব না।” সম্রাট কহিলেন, “আমি ঐ স্থানে আমার প্রাসাদ নির্মাণ করিতে চাই ।” কৃষক কহিল, “মহারাজ বোধ করি বিস্মৃত হইয়াছেন যে, ঐ জাতাকলের ঘর আমার প্রাসাদ।” সম্রাট কহিলেন, “তুমি যদি বিক্রয় না কর তো ঐ গৃহ আমি কাড়িয়া লইতে পারি।” কৃষক কহিল, “না, পারেন না, বর্লিন নগরে বিচারক আছে।” এই কথা শুনিয়া সম্রাট কৃষকের ঘরে আর হস্তক্ষেপ করিলেন