পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছুটির পড়া وع، পারে এবং অপরাপর বস্তু, যাহা অন্ধকারে দেখা যায় না, তাহার। করিতে পারে না ? অন্ধকার রাত্রিতে একটি লোহার গোলা দেখা যায় না। কিন্তু সকলেই জানেন যে উত্তাপ দিতে দিতে ইহা ক্রমে রক্তবর্ণ হইয়া চক্ষুর গোচর হয়। এই গোলক পূর্বে অন্ধকারে সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য ছিল, উত্তাপ দিতে দিতে ইহাতে কী পরিবর্তন হইল যে ইহা সহসা রক্তবর্ণ হইয়া চক্ষুর গোচর হইল। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হইলে প্রথম জানা আবশ্বক যে পদার্থসমুদয় কী প্রকারে গঠিত। নানা প্রমাণের দ্বারা পণ্ডিতেরা জানিয়াছেন যে, পদার্থ-সকল ছাড়াছাড়া কতকগুলি অতি ক্ষুদ্র কণার সমষ্টি । সেই কণাগুলি আকর্ষণের নিয়মে কাছাকাছি দল বাধিয়া আছে বটে, কিন্তু একেবারেই গায়ে গায়ে লাগিয়া নাই । তাহাদের মধ্যে মধ্যে ফঁাক আছে । এই কণাগুলি এত ছোটো যে ইহাদিগকে চোখে দেখিতে পাই না, কিন্তু যখন অনেকগুলি একত্রে মিলিয়া থাকে তখনই আমরা তাহাদিগকে বস্তুবিশেষ বলিয়া দেখিতে পাই। এই কণাকে অণু বলিয়া থাকি । আবার এই অণুগুলিকে কোনো প্রক্রিয়ায় ভাগ করিয়া ফেলিলে তদপেক্ষ ক্ষুদ্রতর অণু পাওয়া যায়, তাহাকে আর কিছুতেই ভাগ করা যায় না। তাহাকে আমরা পরমাণু বলি। এক্ষণে জানিবার চেষ্টা করা যাউক, এই-সমস্ত অণু ও পরমাণু কী ভাবে অবস্থিতি করিতেছে, ইহারা কি স্থির অথবা গতিবিশিষ্ট। বিজ্ঞানবিদ পণ্ডিতেরা অনেক প্রমাণ দ্বারা স্থির করিয়াছেন যে, পদার্থের অণু ও পরামাণু স্থির নহে, তাহারা গতিবিশিষ্ট ; অতি দ্রুত গতিতে ইহারা বিকম্পিত হইতেছে । অণুরাশির বিকম্পনে পদার্থে উত্তাপের স্বষ্টি হয়। কোনো বস্তুই একেবারে উত্তাপশূন্ত নহে, উত্তাপ-সংযোগে পদার্থের অণুবিকম্পন ক্রমেই বাড়িতে থাকে অর্থাৎ তাহারা পূর্বাপেক্ষা অধিক স্থান জুড়িয়া ছুলিতে থাকে। অণুবিকম্পন যতই বাড়িতে থাকে ততই তাহার। উষ্ণ ও উষ্ণতর হয়। মনে করে একটি লোহার গোলা তোমার শরীর অপেক্ষা ঠাণ্ডাও