I am up আমি হই উপরে, He is down তিনি হন নীচে, তখনাে বি এ ডি ব্যাড, এম এ ডি ম্যাড পর্যন্ত আমার বিদ্যে পৌঁছয় নি।
নবাবি জবানিতে চাকর-নোকরদের মহলকে তখন বলা হ’ত তােশাখানা। যদিও সেকেলে আমিরি দশা থেকে আমাদের বাড়ি নেবে পড়েছিল অনেক নীচে, তবু তােশাখানা দফ্তরখানা বৈঠকখানা নামগুলাে ছিল ভিত আঁকড়ে।
সেই তােশাখানার দক্ষিণভাগে বড়াে একটা ঘরে কাঁচের সেজে রেড়ির তেলে আলাে জ্বলছে মিট্মিট্ করে, গণেশ-মার্কা ছবি আর কালীমায়ের পট রয়েছে দেয়ালে, তারই আশেপাশে টিক টিকি রয়েছে পােকা-শিকারে। ঘরে কোনাে আসবাব নেই; মেজের উপরে একখানা ময়লা মাদুর পাতা।
জানিয়ে রাখি আমাদের চাল ছিল গরিবের মতাে। গাড়িঘােড়ার বালাই ছিল না বললেই হয়। বাইরে কোণের দিকে তেঁতুল গাছের তলায় ছিল চালাঘরে একটা পাল্কিগাড়ি আর একটা বুড়াে ঘােড়া। পরনের কাপড় ছিল নেহাত সাদাসিধে। অনেক সময় লেগেছিল পায়ে মােজা উঠতে। যখন ব্রজেশ্বরের ফর্দ এড়িয়ে জলপানের বরাদ্দ হল পাঁউরুটি আর কলাপাতামােড়া মাখন, মনে হল আকাশ যেন হাতে নাগাল পাওয়া গেল। সাবেক কালের বড়ােমানুষির ভগ্নদশা সহজেই মেনে নেবার তালিম চলছিল।
আমাদের এই মাদুর-পাতা আসরে যে চাকরটি ছিল সর্দার তার নাম ব্রজেশ্বর। চুলে গোঁফে লােকটা কাঁচা-পাকা— মুখের উপর টান-পড়া শুকনাে চামড়া, গম্ভীর মেজাজ, কড়া গলা, চিবিয়ে চিবিয়ে