পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভোর আর কিছুতেই হয় না । হয়ত তাহার কলিকাতা যাওয়া ঘটিবে না, কলেজে পড়া ঘটবে না, কত লোক হঠাৎ মারা গিয়াছে, এমনি হয়ত সেও মরিয়া যাইতে পারে । কলিকাতা না দেখিয়া, কলেজে অন্তত কিছুদিন পড়ার আগে যেন সে না মরে !!--দোহাই ভগবান । কলিকাতায় সে কাহাকেও চেনে না, কোথায় গিয়া উঠিবে ঠিক জানা নাই, পথঘাট ও জানা নাই । মাসকতক আগে দেবব্ৰত তাহাকে নিজের এক মেসোমশাইয়ের কলিকাতার ঠিকানা দিয়া বলিয়াছিল, দরকার হইলে এই ঠিকানায় গিয়া তাতার নাম করিলেই তিনি আদর করিয়া থাকিবার স্থান দিবেন। ট্ৰেনে উঠিবার সময় অপু সে-কাগজখানা বাহির করিয়া পকেটে রাখিল । রেলের পুরানো টাইমটেবলের পিছন হইতে ছিাড়িয়া লওয়া একখানা কলিকাতা শহরের নক্সা তাহার টিনের তোরঙ্গটার মধ্যে অনেকদিন আগে ছিল, সেখানাও বাহির করিয়া বসিল । ইহার পূর্বেও অপু শহর দেখিয়াছে, তবুও ট্রেন হইতে নামিয়া শিয়ালদহ স্টেশনের সম্মুখে বড় রাস্তায় একবার আসিয়া দাড়াইতেই সে অবাক হইয়া গেল ! এরকম কাণ্ড সে কোথায় দেখিয়াছে ? ট্রামগাড়ি ইহার নাম ? অার এক রকমের গাড়ি নিঃশব্দে দৌড়াইয়া চলিয়াছে, অপু, কখনও না দেখিলেও মনে মনে আন্দাজ করিল, ইহারই নাম মোটর গাড়ি । সে বিস্ময়ের সহিত দু-একখানার দিকে চাহিয়া চাহিয়া দেখিতে লাগিল ; স্টেশনের অফিস ঘরে সে মাথার উপর একটা কি চাকার মত জিনিস বন বন বেগে ঘুরিতে দেখিয়াছে, সে আন্দাজ করিল উহাই ইলেকট্রিক পাখা । যে-ঠিকানা বন্ধু দিয়াছিল, তাহা খুজিয়া বাহির করা তাহার পক্ষে এক মহা মুশকিলের ব্যাপার, পকেটে রেলের টাইমটেবলের মোড়ক হইতে সংগ্ৰহ করা। কলিকাতার যে নক্সা ছিল তাহা মিলাইয়া হ্যারিসন রোড খুজিয়া বাহির করিল। জিনিসপত্র তাহার এমন বেশী কিছু নহে, বগলে ছোট বিছানাটি ও ডান হাতে ভারী পুটুলিটা KOB