পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কামাপুকুরে কোন ঠাকুরবাড়িতে রাত্রে খায় না। সকালে কোথায় ছেলে পড়াইয়া একবেলা তাহদের সেখানে খায় । সম্প্রতি সে বোনের বিবাহে বাড়ি যাইতেছে, ফিরিয়া না। আসা পর্যন্ত অপু রাত্রে ঠাকুরবাড়িতে তাহার বদলে খাইতে পারে। বাড়ি যাইবার পূর্বে ঠাকুরবাড়ির সেবাইতকে বলিয়া কহিয়া সে সব ব্যবস্থা করিয়া যাইবে এখন। অপু রাজী আছো ? রাজী ? হাতে স্বৰ্গ পাওয়া নিতান্ত গল্পকথা নয় তাহা হইলে ! ঠাকুরবাড়ির খাওয়া নিতান্ত মন্দ নয়। অপুর কাছে তাহা খুব ভাল লাগে। আলোচলের ভাত, টক, কোনও কোনও দিন ভোগের পায়েসও পাওয়া যায়, তবে মাছ মাংসের সম্পর্ক নাই, निद्धtभिय । কিন্তু এ তো আর দু’বেল নয় ; শুধু রাত্রে। দিনমানটাতে বড় কষ্ট হয়। দুই পয়সার মুড়ি ও কলের জল । তবুও তো পেটটা ভরে । কলেজ হইতে বাহির হইয়া বৈকালে তাহার এত ক্ষুধা পায় যে গা ঝিমাঝিম করে, পেটে যেন এক ঝাক বোলতা হুল ফুটাইতেছে -পয়সা জুটিাইতে পারিলে অপু এ সময়টা পথের ধারের দোকান হইতে এক পয়সার ছোলাভাজা কিনিয়া খায়। সব দিন পয়সা থাকে না, সেদিন সন্ধ্যার পরেই ঠাকুরবাড়ি চলিয়া যায়, কিন্তু ঠাকুরের আরতি শেষ না হওয়া পৰ্যন্ত সেখানে খাইতে দিবার নিয়ম নাই-তাও একবার নয়, দুইবার দুটি ঠাকুরের আরতি । আরতির কোন নির্দিষ্ট সময় নাই, সেবাইত ঠাকুরের মজি ও সুবিধামত রাত আটটাতেও হয়, ন’টাতেও হয়, দশটাতেও হয় আবার এক-একদিন সন্ধ্যার পরেই হয়। 8ግ