পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মায়ের কাছে অপু 53 সন্ধ্যা ঠিক হয় নাই, উঠানে তেলি-বাড়ির বড় বেী দাড়াইয়া কি গল্প করিতেছিল, দূর হইতে অপুকে আসিতে দেখিয়া হাসিমুখে বলিল —কে আসছে বলুন তো মা-ঠাকরুণ ?—সর্বজয়ার বুকের ভিতরটা কেমন করিয়া উঠিল, অপু নয় তো।--অসম্ভব।-সে। এখন কেন—— পরীক্ষণেই সে ছুটিয়া আসিয়া অপুকে বুকের ভিতর জড়াইয়া ধরিল। সর্বজয়ার চোখের জলে তাহার জামার হাতাটা ভিজিয়া উঠিল। মাকে যেন নিজের অপেক্ষা মাথায় ছোট, দুর্বল ও অসহায় বলিয়া অপুর মনে হইতে লাগিল। তপঃকুশ শবরীর মত ক্ষীণাঙ্গী, আলুথালু, অর্ধরুক্ষ চুলের গোছা একদিকে পড়িয়াছে, মুখের চেহারা এখনও সুন্দর, গ্রীব ও কপালের রেখাবলী এখনও অনেকাংশে ঋজু ও সুকুমার। তবে এবারে মায়ের চুল পাকিয়াছে, কানের পাশের চুলে পাক ধরিয়াছে। নিজের সবল দৃঢ় বাহু-বেষ্টনে, সরল, চির দুঃখিনী মাকে সংসারের সহস্ৰ দুঃখ-বিপদ হইতে বঁাচাইয়া রাখিতে অপুর ইচ্ছা যায়। এ ভাবটা এইবার প্রথম সে মনের মধ্যে অনুভব করিল, ইতিপূর্বে কখনও হয় নাই। বড়-বেী একপাশে হাসিমুখে দাড়াইয়াছিল, সে অপুকে ছোট দেখিয়াছে এখন আর তাহাকে দেখিয়া ঘোমটা দেয় না । সর্বজয়া বলিল,-এবার ও এসেছে বৌমা এবার কালই কিন্তু । 8tr