পাতা:ছোটদের অপরাজিত - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধরিয়া টানিয়া দাড় করাইয়া বলিল-শোন বাবা -কচ্ছপ দুটোর দিকে আঙুল দিয়া দেখাইয়া বলিল-আচ্ছ। এ দুটাের মধ্যে যদি যুদ্ধ হয় তবে কে জেতে বাবা ?--অপু গম্ভীর মুখে ভাবিয়া ভাবিয়া বলে-ওই বঁ। দিকেরটা জেতে।--কাজলের মনের দ্বন্দ্ব দূর হয়। কিন্তু গোলদীঘিতে মাছের ঝাক দেখিয়া সে সকলের অপেক্ষা খুশী । এত বড় বড় মাছ আর এত এক সঙ্গে । মেলা ছেলেমেয়ে মাছ দেখিতে জুটিয়াছে বৈকালে সেও বাবার কথায় এক পয়সার মুড়ি কিনিয়া জলে ছড়াইয়া দিয়া অধীর আগ্রহে মাছের খেলা দেখিতে লাগিল । তুমি ছিপে ধরবে বাবা ? কত বড় বড় মাছ ? অপু বলিল-চুপ চুপতা-ও মাছ ধরতে দেয় না ! ফুটপাতে একজন ভিখারী বসিয়া । কাজল ভয়ের সুরে বলিলশিগগির একটা পয়সা দাও বাবা, নইলে ছুয়ে দেবে। -- তাহার বিশ্বাস, কলকাতার যেখানে যত ভিখারী বসিয়া আছে ইতাদের পয়সা দিতেই হইবে, নতুবা ইহাৱা আসিয়া ছুইয়া দিবে, তখন তোমাকে বাড়ি ফিরিয়া স্নান করিতে হইবে, সন্ধ্যাবেলা কাপড় ছাড়িতে হইবে।-সে ५८क अश्। श्छि भi } বর্ষাকালেব মাঝামাঝি অপুর চাকরিটি গেল। অর্থের এমন কষ্ট সে অনেক দিন ভোগ করে নাই । ভাল স্কুলে দিতে না পারিয়া সে ছেলেকে কর্পোরেশনের ফ্রি স্কুলে ভর্তি করিয়া দিল । ছেলেকে দুধ পর্যন্ত দিতে পারে না, ভাল কিছু খাওয়াইতে পারে না । বইয়ের বিশেষ কিছু আয় নাই। হাত এদিকে একেবারে কপৰ্দকশূন্য । কাজলের মধ্যে অপু একটা পৃথক জগৎ দেখিতে পায়। দু’টা টিনের চাকতি, গোটা দুই মার্বেল, একটা কল টেপা খেলনা, মোটর গাড়ি, খান দুই বই হইতে যে মানুষ কিসে এত আনন্দ পায়-অপু তাহা বুঝিতে পারে না। চঞ্চল ও দুষ্ট ছেলে-পাছে হারাইয়া যায়, এই ভয়ে অপু তাহাকে মাঝে মাঝে ঘরে চাবি দিয়া রাখিয়া নিজের কাজে বাহির হইয়া যায়—এক একদিন চার পাঁচ ঘণ্টাও হইয়া যায়-- ዓNኃ