জেলের কুঠরীতে ফিরাইয়া লইয়া যাওয়া হইত। বিচার শেষ হইতে প্রায় পনেরো দিন লাগিয়া গেল এবং এই পনেরো দিন ধরিয়া সেই অপূর্ব্ব বিচারের যে বিবরণ তিনি তাঁহার আত্মচরিতে লিখিয়া গিয়াছেন, তাহা পাঠ করিলে মনে হয়, যেন উহা বিংশ শতাব্দীর সভ্য জগতের কোন ব্যাপার নয়, অশিক্ষিত বর্ব্বর য়ুগের স্মৃতি।
এই সম্পর্কে তিনি লিখিতেছেন, “যে কয়েকদিন ধরিয়া বিচার হইল, তাহার মধ্যে এমন বিচিত্র সব ঘটনা নিত্য ঘটিতে লাগিল, যাহা হইতে বৃটিশকর্তৃত্বে ভারতের নিটিভ ষ্টেটের শাসনকার্য্যের ব্যাপার স্পষ্ট বুঝিতে পারিলাম। সমস্ত বিচারপদ্ধতিটা একটা হাস্যকর প্রহসন—সেইজন্যই হয়ত বাহির হইতে কোন সংবাদপত্রের প্রতিনিধিকে সেখানে ঢুকিতে দেওয়া হয় না। পুলিশের যাহা খুসী, পুলিশ তাহা করিতে পারে। বিচারকের আদেশ মানিতে সে বাধ্য নয়— এমন কি প্রকাশ্য আদালতে বিচারকর্ত্তার্কেই পুলিশের লোক ধমক দিয়া দিল— বেচারা বিচারকর্ত্তাকে তাহা মানিয়া লইতে হইল—বহুবার দেখিলাম, পুলিশের লোক বিচারকর্ত্তার হাত হইতেই কাগজপত্র জোর করিয়া টানিয়া লইল!”
এই ভাবে বিচার চলিবার পর, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাঁহাদের দেড় বৎসর কারাদণ্ড হইল।