পাতা:জগন্নাথের রথ - শ্রী অরবিন্দ.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জগন্নাথের রথ

দুর্ঘটনা অবিরল, রথ ভাঙ্গিয়া যায়, আবার কষ্টেসৃষ্টে মেরামতের পর সদর্প চলন। নিদিষ্ট লক্ষ্য নাই, তবে যে নূতন দৃশ্য অনতিদূরে চোখের সম্মুখে পড়ে, “এই লক্ষ্য, এই লক্ষ্য” চীৎকার করিয়া রথের মালিক রাজসিক অহঙ্কার সেই দিকে ছুটে। এই রথে চলায় যথেষ্ট ভোগ সুখ আছে, বিপদ ও অনিবার্য্য, ভগবানের নিকট পোঁছা অসম্ভব। আধুনিক পাশ্চাত্যসমাজ এই ধরণেরই মোটরগাড়ী।

 তৃতীয়টি মলিন পুরাণ কচছপগতি আধভাঙ্গা গরুরগাড়ী, টানে কৃশ অনশনক্লিষ্ট আধমরা বলদ, চলিতেছে সঙ্কীর্ণ গ্রাম্যপথে; একজন ময়লাকাপড়পরা ভূঁড়িসর্ব্বস্ব শ্লথ অন্ধ বুদ্ধ ভিতরে বসিয়া মহাসুখে কাদামাখা হুঁকা টানিতে টানিতে গাড়ীর কর্কশ ঘ্যান্‌ ঘ্যান্‌ শব্দ শুনিতে শুনিতে অতীতের কত বিকৃত আধ আধ সমৃতিতে মগ্ন। এই মালিকের নাম তামসিক অহঙ্কার। গাড়োয়ানের নাম পুঁথি-পড়া জ্ঞান, সে পঞ্জিকা দেখিতে দেখিতে গমনের সময় ও দিক নির্দ্দেশ করে, মুখে এই বুলি “যাহা আছে বা ছিল, তাহাই ভাল, যাহা হইবার চেষ্টা তাহাই খারাপ।” এই রথে ভগবানের নিকট না হৌক শূন্য ব্রহ্মে পেীঁছিবার বেশ আশু সম্ভাবনা আছে।