পার হইয়া সূর্য্যালোকে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে ক্রীড়া করিতেছেন। আবার দেখিল, সন্ন্যাসী অনেকদিন অনাহারে রহিয়াছে, গত দুই দিন শরীর ক্ষুৎপিপাসায় বিশেষ কষ্ট পাইয়াছে। হরিমোহন বলিল, “এ কিরে কেষ্টা? বাবাজী তোকে এত ভালবাসেন অথচ ক্ষুৎপিপাসা ভোগ করিতেছেন। তোর কি কোন কাণ্ডজ্ঞান নাই! এই নির্জন ব্যাঘ্রসঙ্কুল অরণ্যে কে তাঁহাকে আহার দিবে।” বালক বলিল, “আমি দিব, কিন্তু আর এক মজ দেখ।” হরিমোহন দেখিল, ব্যাঘ্র উঠিয়া তাহার খাবার এক প্রহারে নিকটর্ত্তী বল্মীক ভাঙ্গিয়া দিল। ক্ষুদ্র শত শত পিপীলিকা বাহির হইয়া ক্রোধে সন্ন্যাসীর গায়ে উঠিয়া দংশন করিতে লাগিল। সন্ন্যাসী ধ্যানমগ্ন, নিশ্চল, অটল। তখন বালক সন্ন্যাসীর কর্ণকুহরে অতি মধুর স্বরে একবার ডাকিল, “সখে!” সন্ন্যাসী চক্ষু উন্মীলন করিলেন। প্রথমে মোহ-জ্বালানয় দংশন অনুভব করেন না, তখনও কর্ণকুহরে সেই বিশ্ববাঞ্ছিত চিত্তহারী বংশীরব বাজিতেছে—যেমন বৃন্দাবনে রাধার কানে বাজিয়াছিল। তাহার পরে শত শত দংশনে বুদ্ধি শরীরের দিকে আকৃষ্ট হইল। সন্ন্যাসী নড়িলেন না—সবিস্ময়ে মনে মনে বলিতে লাগিলেন, “এ কি? আমার এমন ত কখন হয় নাই।
পাতা:জগন্নাথের রথ - শ্রী অরবিন্দ.pdf/৪৭
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জগন্নাথের রথ
৪০