ছইয়ের মধ্যে পিসিমা ঘুমিয়ে পড়েচেন। নিস্তব্ধ ভাদ্র অপরাহ্ণ। বাইরে নৌকোয় তক্তার ওপর বসে বসে হীরু কত কি ভাবছিল। এ গ্রামে যদি সে থাকতে পারত! মধু ডাক্তারের মতো হাটতলায় ওষুধের ডিস্পেন্সারি খুলে? ডাক্তারীটা যদি শিখতো সে!
পূজোর বাজারটা ফিরবার সময় করতে হবে কলকাতা থেকে···অন্ততঃ দেড়-শো টাকার বাজার। আসবার সময় খুব উৎসাহ করে সুরমার কাছ থেকে ফর্দ করে নিয়ে এসেছে···
একটা মানুষের মধ্যে মানুষ থাকে অনেকগুলো! জামালপুরের হীরু অন্যলোক, এ হীরু আলাদা। এ বসে বসে ভাবছে, কুমীদের রান্নাঘরে অরন্ধনের নেমন্তন্ন খেতে বসেছিল, সেই ছবিটা। অনবরত ওই একটা ছবিই।···
কুমী বলছে—আমার কথা মনে পড়তো হীরুদা?···
কুমী এখনও কি ঠিক তেমনি হাত-পা নেড়ে কথা বলে···সেই ছেলেবেলাকার মতো!···আচ্ছা, আর কারো সঙ্গে কথা ব’লে অমন আনন্দ হয় না কেন? সুরমার সঙ্গেও তো রোজ কত কথা হয়···কই···
রেলের বাঁশির আওয়াজে হীরুর চমক ভাঙলো। ওই স্টেশনের ঘাট দেখা দিয়েছে। সিগ্ন্যাল নামানো, বোধ হয় ডাউন ট্রেণটা আসবার দেরি নেই···