১৮৯
ডাকগাড়ি
তার ইঞ্জিন, সেখানে দূরে একটা বড় বাড়ি ও টিনের ছাদ দেওয়া দালান মতো দেখা যাইতেছে। রাণাঘাট পৌঁছিয়া গেল এর মধ্যে।
প্লাটফর্মে নামিয়াই নবু বলিল—একখানা পাঁউরুটি কিনে দ্যাওনা দিদি! কি খিদেই পেয়েছে—ডাক্ব?
আঁচলের গেরো খুলিয়া তিনটি পয়সা বাহির করিয়া রাধা ভাইকে একখানা পাঁউরুটি কিনিয়া দিল। তাহার নিজেরও খুব ক্ষুধা পাইয়াছে—সেও তো সারাদিন কিছু খায় নাই। ভাইকে বলিল—আর কিছু খাবি? এক কাজ কর বরং, চল বাইরের দোকান থেকে আলুর দম কিনে দিই এক পয়সার। পাঁউরুটি দিয়ে খা, পেট ভরবে এখন।
নবু বালিল—তুমি কিছু খাবে না, দিদি?
—আমি রেলের কাপড়ে কি খাব? চা খেতে পারি, ওতে দোষ নেই—যা দিকি ঐ চা বিক্রি করচে, জেনে আয় কত করে নেবে এক পেয়ালার দাম। নবু জানিয়া আসিয়া বলিল—এক পেয়ালা চা চার পয়সা, দিদি।
—উঃ বাবা, চার পয়সা। তবে থাক্ গে। মোটে আর ন’টি পয়সা আছে। বাবার জন্য একখানা পাঁউরুটি কিনে নিতে হবে। দুধ দিয়ে পাঁউরুটি খেতে ভালোবাসেন বাবা। মা’র জন্য কি নেব বলত?
রাণাঘাট স্টেশনে দাঁড়াইয়া রাধার মনের দুঃখ অনেকটা চলিয়া গিয়াছে। কত লোক-জন, গাড়ি-ঘোড়া, দোকান, পসার—দেখিলে মনে শান্তি পাওয়া যায়।
এমন সময়ে প্লাটফর্মে একটা শব্দ উত্থিত হইল—লোক-জন, পানওয়ালা, পাউরুটিওয়ালারা, সন্ত্রস্ত হইয়া উঠিল। লোক যে