বেড়াতে বেড়াতে ওদের বাড়ির দিকে গেলাম। সামনের উঠানে নারিকেলের ডাল পুঁতে বৃষোৎসর্গ শ্রদ্ধের মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে—মণ্ডপের সামনে সামিয়ানা টাঙানো। গ্রামের অনেকেই সেখানে উপস্থিত, সেজ ছেলে গোপেশ্বর কাছা গলায় গ্রামের বৃদ্ধ চৌধুরী মহাশয়ের সঙ্গে আফিসে নূতন লোক ঢোকানো আজকাল যে কত অসম্ভব হ’য়েছে—সে সম্বন্ধে কি বলচে। গোপেশ্বরের বয়েস পঁয়তাল্লিশ ছাড়িয়েছে, রেলের অডিট আফিসে বড় চাকুরি করে—চৌধুরী মহাশয় বোধ হয় তাকে কারো চাকুরির জন্যে ব’লে থাকবেন, কথার ভাবে তাই মনে হ’ল।
—আগে অনেক ঢুকিয়েছি কাকাবাবু, সিমসন গিয়ে পর্যন্ত আর সেই সুবিধে নেই। সিমসন সাহেব, আমি যা বলেছি তাই করেছে। এখন পোস্ট খালি হ’লে সব তলায় তলায় ঠিক হ’য়ে যায়—আপিসের আর সেই দিন নেই। শুনলাম গোপেশ্বর রিটায়ার করবার পরে প্রভিডেণ্ট ফণ্ডের দরুণ প্রায় আঠার ঊনিশ হাজার টাকা পাবে, হাওড়ায় না বরানগরে জমি কিনেছে, সেই খানেই বাড়ি করবে। আজ দশ-এগারো বছরের পরে সে দেশে এসেছে, মায়ের মৃত্যু না ঘটলে, আরও কতদিন আসতো না তাই বা কে জানে?
ওদের বাড়ির মধ্যে ঢুকে আমি অবাক্ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। এদের বাড়িতে যে এত ছেলে-মেয়ে, বৌ, ঝি-চাকর আছে—তা চোখে না দেখ্লে বিশ্বাস করবার জো ছিল না। মেজ, সেজ ও ছোট ছেলের বৌয়েরা এসেছে, তাদের ছেলেমেয়ে, নাতি, নাতনীতে বাড়ি ভর্তি। খুব ছোট বেলায় যে মেয়েদের দেখেছিলাম, হয়তো অনেকের সঙ্গে খেলাও করেছি—তাদের বিয়ে হ’য়ে