সই
দুপুরে বাসায় শুইয়া আছি, এমন সময়ে উচ্ছলিত খুশি ও প্রচুর তরল হাস্যমিশ্রিত তরুণ কণ্ঠস্বরে শুনিতে পাইলাম, ও সই, সই লো—ও—ও, ক্যামন আছ, ও সই?
পাশের ঘর হইতে আমার ভগ্নি (বিধবা, বয়স ত্রিশের বেশি) হাসির সুরেই বলিল, এস সই, এস। ব’স, কি ভাগ্যি যে এ পথে এলে?
—এই তোমার সয়া হাট কত্তি এল। নতুন গুড়ের পাটালি সের দুই করেলো আজ বেন্ বেলা। ছোট ছেলেডার আবার জ্বর আর ছর্দি। তাই তোমার সয়াকে হাটে পাঠালাম, আমি বলি সইয়ের সঙ্গে কতদিন দেখা হই নি। ছেলেডাকে নিয়ে আর হাটের ভিড়ের মধ্যে ক’নে যাব, সইয়ের বাড়ি একটু বসি।
কথার ভঙ্গিতে মনে হইল দুলে কি বাগ্দীদের মেয়ে। আমার বোনের সহিত সই পাতান তাহার পক্ষে আশ্চর্য নয়, কারণ তাহারও শ্বশুরবাড়ি নিকটবর্তী এক পল্লীগ্রামেই। ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার সুবিধার জন্য শহরের বাসায় থাকে।
দুপুরের ঘুম নষ্ট হইল। বোনের নবাগতা সঙ্গীটি লেখাপড়া ভালো করিয়া শিখিলে এ্যানি বেসান্ট হইতে পারিত । মুখের তাহার বিরাম নাই। অনবরত বকিয়া যাইতেছে, এবং কথার ফাঁকে ফাঁকে মাঝে মাঝে ছেদস্বরূপ বলিতেছে, সই একটা পান দেবা?···দোক্তা খাও না? তা দ্যাও একটা এমনি পানও