জন্ম ও মৃত্যু
৩৪
আগত এই সই-মাকে দেখিয়া সে যে খুব খুশি হইয়া উঠিয়াছে, এমন কোন লক্ষণ তাহার ব্যবহারে প্রকাশ পাইল না। তাহার সই-মা বলিল, বেশ জামাটা টুলুর গায়ে। টুলুর আর কোন ছেঁড়া-কাটা জামা-টামা নেই, হ্যাঁ সই? ছেলেডা এই শীতি আদুড় গায়ে থাকে। তোমার সয়া এবার অসুখে পড়ে গাছ কাটতে পারে নি। মোটে দশটা গাছে যা রস হয়, তাই জ্বাল দিয়ে সের আড়াই পাটালি হয়। হাট্রা হাটে পাটালির দর নেই, তার ওপর ছ’ পয়স। আট পয়সা সের। ওই থেকে চাল ডাল, ওই থেকে সব। গাছের আবার খাজনা আছে। ছেলেডাকে একখান। দোলাই কিনে দেব দেব ভাবচি আজ তিন হাট, কোথা থে দেই বল দিকিন সই? কি রে—কি? হুঁ, উ উ? ছেলের আবার আবদার দেখ না?
আমার বোন বলিল, কি? কি বল্চে হাবুল?
—ওর কথা বাদ দ্যাও সই। রাস্তা দিয়ে ওই যে মিন্সে চিনির কি বলে ও-গুলো—
হাবুল বলিল—গোলাপছড়ি।
—তা যে ছড়িই হোক, ওই ওঁকে কিনে দিতে হবে। না, ও খায় না। কি ছড়ি? গোলাপছড়ি? হি হি, নাম দেখ না?—গোলাপছড়ি।
আমার ভাগ্নের দৃষ্টিও বোধ হয় ইতিমধ্যে গোলাপছড়ির দিকে পড়িয়াছিল। সে ছুটিয়া গিয়া ফিরিওয়ালাকে ডাকিয়া আনিল ও আমায় সটান আসিয়া বলিল—গোলাপছড়ি কিনব, মামা। পয়সা দাও।
বোধ হইল হাবুলও কিছু ভাগ পাইরাছে, কারণ একটু পরেই হাবুলের মায়ের খুশিভরা গলার সুর শুনিতে পাইলাম—