৩৯
রামশরণ দারোগার গল্প
কর্মী শ্রীযুক্ত যোগেশ চক্রবর্তী। যোগেশবাবু আমার পরিচিত পুরাতন বন্ধুও বটে। তাঁর দ্বারা স্ত্রীলোকঘটিত নানা ঘটনায় পুলিশের অনেক উপকারও হয়েছে বটে। তাঁর বর্তমান পত্রে বিশেষ কিছু লেখা নেই, মাত্র এইটুকু যে, যিনি এই পত্র নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি যোগেশবাবুর পরিচিতা; তার বক্তব্য কি, তা শুনে আমি যদি তাকে সাহায্য করি,—তবে ভালো হয়। আমরা পুলিশের লোক—কাউকে বিশ্বাস করা আমাদের অভ্যাস নয়। মানুষের চরিত্রের খারাপ দিকটা এত দেখেছি যে—এতে আমাদের দোষ দেওয়া খুব বেশি চলে না।
স্ত্রীলোকটিকে একবার ভালো করে চেয়ে দেখে নিয়ে মনে হ’ল তাঁর বয়েস চল্লিশের মধ্যে হবে। এক সময়ে খুব রূপসী ছিলেন। খুব সরল চরিত্রের মেয়ে নয়—একটু খেলোয়াড় ধরনের। অবস্থাও খুব ভালো নয়।
জিজ্ঞেস করলুম—আপনি কি চান?
তিনি উত্তরে যা বললেন, সংক্ষেপে তার মর্ম এই যে—এখানকার কোন কালী মন্দিরের পূজারীর সঙ্গে তাঁর একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের সময় তাঁর অবস্থা খুব ভালো ছিল না বলেই ওরকম পাত্রে মেয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। মেয়েটি বড়ই কষ্টে আছেন। তিনি বর্তমানে মেয়েকে এখান থেকে নিয়ে যেতে চান—তাঁর নিজের কাছে। যোগেশবাবুর সাহায্যে মেয়েটিকে কোথাও লেখাপড়া কি নার্সের কাজ শেখাবার ব্যবস্থাও করতে পারেন; মোটের উপর মেয়েকে তিনি এখানে রাখতে রাজী নন, এ বিষয়ে আমাকে তাঁর সাহায্য করতে হবে।
এত সংক্ষেপে তিনি কথাটা আমায় বলেন নি। স্ত্রীলোকটির কথার বাঁধুনি খুব। তাঁর নিজের জীবনের ইতিহাসও কিছু কিছু