জন্ম ও মৃত্যু
৫২
বিবাহের কিছুদিন পরে পরেশ কাকার বৌ বাড়ি চলিয়া গেলেন। মাস-দুই পরে আবার আসিলেন।
সকালে পরেশ-কাকাদের বাড়ি বেড়াইতে গেলাম। তাহাদের বাড়ির সকলে তখন কি-একটা ছুটিতে বাড়ি আসিয়াছে। অনেকে আমার বয়সী ছেলেমেয়ে।
নতুন খুড়ীমা বারান্দায় বসিয়া কুটনো কুটিতেছেন। জরিপাড় শাড়ি পরনে, আমাদের স্কুলে সরস্বতী-প্রতিমা গড়ানো হইয়াছিল এবার, ঠিক যেন প্রতিমার মতো মুখশ্রী।
আমরা সামনের উঠানে ছুটাছুটি করিয়া খেলা করিতেছিলাম। পরেশ-কাকার বৌ ওখানে বসিয়া থাকাতে সেদিন আমার যেন উৎসাহ দ্বিগুণ বাড়িয়া গেল। ইচ্ছা হইল, কত কি অসম্ভব কাজ করিয়া খুড়ীমাকে খুশি করি। সে কি লাফঝাঁপ, কি দৌড়াদৌড়ি, কি চেঁচামেচি শুরু করিয়া দিলাম হঠাৎ! গায়ে যেন দশ জনের বল আসিল।
এমন সময় শুনিলাম পরেশ-কাকার বৌ বাড়ির ছেলে নেপালকে বলিতেছেন—ওই ফর্সা ছেলেটি কে নেপাল? বেশ চোখ-দুটি—
নেপাল বলিল—ওপাড়ার গাঙ্গুলী-বাড়ির পাবু—
পরেশ-কাকার বৌ বলিলেন—ডাক না ওকে?
আনন্দে আমার বুকের মধ্যে ঢিপঢিপ করিতে লাগিল। মুখ আগেই রোদে ছুটাছুটিতে রাঙা হইয়াছিল, এখন তা আরও রাঙা হইয়া উঠিল লজ্জায়। অথচ কিসের যে লজ্জা!
গিয়া প্রথমেই একটি প্রণাম করিলাম। পরেশ-কাকার বৌ বলিলেন—তোমার নাম কি? পাবু? ভালো নাম কি?
লজ্জা ও সঙ্কোচের হাসি হাসিয়া বলিলাম—বাণীব্রত—