৮৫
অরন্ধনের নিমন্ত্রণ
হীরু বললে—যাও—অমন করে না ছিঃ, চুলটুল বেঁধে দিতে বল গিয়ে। ওঁরা খুব ভালো লোক, আর বড় লোক। জামালপুরে ওঁদের খাতির কি! আমি অনেক কষ্টে ওঁদের এখানে এনেচি। বড় ভালো হবে এ বিয়ে যদি ভগবানের ইচ্ছেয় হয়—
অনেক কষ্টে কুমীকে রাজী করিয়ে তার চুল বাঁধা হ’ল, মেয়ে দেখানোও হ’ল। দেখানোর সময় মেয়ের অজস্র গুণ ব্যাখ্যা ক’রে গেল হীরু। কুমী কিন্তু পাঞ্জাব প্রদেশ কোন্ দিকে বলতে পারলে না, তাজমহল কে তৈরি করেছিল সে সম্বন্ধেও দেখা গেল সে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। হাতের লেখা বেঁকে গেল। গান গাইতে জানে না বললে—যদিও সে ভালোই গাইতে জানে এবং তার গলার সুরও বেশ ভালো।
সঙ্গের ভদ্রলোকটি মেয়ে দেখা শেষ ক’রেই ফিরতি নৌকোতে রেল স্টেশনে চলে গেলেন। রাত্রের ট্রেণেই তিনি খুলনায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি যাবেন। যাবার সময়ে বলে গেলেন—মতামত চিঠিতে জানাবেন। হীরু তাঁকে নৌকোতে তুলে দিয়ে ফিরে এসে কুমীকে বললে—কি ক’রে বললে—গান গাইতে জানো না? ছিঃ একি ছেলেমানুষি, ওরা শহরের মানুষ, গান শুনলে খুব খুশি হয়ে যেত। এমনি তো ঘরের কোণে খুব গান বেরোয় গলায়? আর এর বেলা—
কুমী রাগ ক’রে বললে—ঘরের কোণে গান গাইবে না তো কি আসরে বসে গাইতে যাবে? পারব না যার তার সামনে গান গাইতে।
হীরুও রেগে বললে—তবে থাকো চিরকাল আইবুড়ো ধিঙ্গী হ’য়ে। আমার কি? কুমীর বাড়ির ও পাড়ার সবাই