পাতা:জন্‌ ষ্টুয়ার্ট মিলের জীবনবৃত্ত.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমরা যখন সকল কারণেরই কারণ দেখিতে পাই, তখন জগৎ-কার, ণেরও যে কারণ নাই এ কথা আমরা বলিতে পারি না বটে ; কিন্তু জগৎ-কারণেরও কারণ কল্পনা করিতে গেলে অনবস্থাপাত উপস্থিত হয়— অর্থাৎ জগৎ স্রষ্টার স্রষ্টা, তৎ-স্রষ্ট ইত্যাদি কারণ-পরম্পরার আনন্ত্য আসিয়া উপস্থিত হয় ; সুতরাং অনন্ত কারণ-পরম্পরার কল্পনারূপ গুরুত্বের আশ্রয় লওয়া অপেক্ষ এই জগৎকেই স্বয়ং স্বই বলিলে কল্পনার অনেক লাঘব হয়। এই সম্প্রদায়ের লোকেরা এরূপ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে কিছুই বলিতে সমর্থ হইবেন না ; অথচ প্রতিপক্ষের প্রতি পাষণ্ড নাস্তিক প্রভৃতি গালিবর্ষণ করিবেন। ধৰ্ম্মনীতি বিষয়ে যেরূপ, সেইরূপ রাজনীতি ও সমাজনীতি বিষয়েও যুক্তির উপাসকদিগের এই সম্প দায়ের লোকের নিকট হইতে অনেক অকারণ আপত্তি সহ্য করিতে হয়। এই সকল অযৌক্তিক আপত্তি খণ্ডন করিতে সংস্কারকদিগের অনেক সময় বৃথা অতিবাহিত হইয়া যায়। - দ্বিতীয় সম্প্রদায়ের লোকের স্বভাবজ জ্ঞান মানেন না। তাছাদিগের মতে সমস্ত মানবজ্ঞানেরই মূল ভূয়োদর্শন ও সংযোজন। শিশু যখন মাতৃগর্ভ হইতে ভূমিষ্ঠ হয়, তখন সে কোনও স্বভাবজ জ্ঞান লইয়া ভূমিষ্ঠ হয় না। সেই সদ্যঃপ্রস্থত শিশুতে জিজ্ঞাসাবৃত্তি ও জ্ঞানধারণ শক্তি থাকে মাত্র । জগতের সমস্ত বস্তুই সে জানিতে চেষ্টা করে, এবং সেই চেষ্টায় ভূয়োদর্শনে ক্রমে সমস্ত বস্তুরই জ্ঞান তাহার উপলব্ধি হইতে থাকে। এই সকল ভূয়োদর্শনজাত জ্ঞানরাশি সংযোজিনী শক্তি দ্বারা এরূপ পরস্পর-সম্বন্ধ হইয়া যায় যে একটর স্মরণে অপরগুলির স্মরণ অনিবাৰ্য্য বেগে আসিয়া পড়ে । যাহারা স্বভাবজ জ্ঞান মানেন না, তাহারা জ্ঞানের অপরিবর্তনীয়তা ও অভ্রান্ততাও স্বীকার করেন না। ভূয়োদর্শন যাহাদিগের জ্ঞানের, আকর, তাহাদিগের জ্ঞান সতত পরিবর্তনশীল, এবং নিত্য-সংস্কারসহ। যত দিন যায়, ততই ভূয়োদর্শনের পরিপুষ্টি ও উৎকর্ষ সাধিত হয়। পঞ্চমবর্ষীয় বালকের ভূয়োদর্শন অপেক্ষ তাহার পরিণত বয়সের ভূয়োদর্শন প্রায়ই অধিকতর পরিপুষ্ট ও উৎকর্ষপ্রাপ্ত হইয়া থাকে। ব্যক্তিসম্বন্ধে