૧૦ জন্ম ষ্টয়াট মিলের জীবনবৃত্ত । তেন ও ভাল বাসিতেন, তথাপি তীক্ষ প্রতিভা ও সজীব সহৃদয়তায় তাহার নুনি হওয়ায়, স্বামী তাহার প্রকৃত সহচর হইতে পারেন নাই। সমাজ ও রাজনীতি বিষয়ে স্ত্রীজাতির অধিকার না থাকায় তাহার উচ্চ বৃষ্টি সকল কার্য্যে পরিণত হইয়া বিকাশ পাইতে পারিত না, সুতরাং তাহার জীবন সতত ধ্যানমগ্ন থাকিত, কেবল কতিপয় বন্ধুর সমাগমে সেই ধ্যান মধ্যে মধ্যে ভগ্ন হইত মাত্র । মিল টেলরপত্নীর সেই কতিপয় বন্ধুর অন্যতম ছিলেন। টেলরপত্নী সৰ্ব্ব প্রকার কুসংস্কার হইতে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তিনি সমাজের অনেক চিরন্ধঢ় কুপ্রথার বিরুদ্ধে সতত অসন্দিগ্ধভাবে স্বাভিমত ব্যক্ত করিতেন। তাহার তৎকালীন ধৰ্ম্ম প্রবৃত্তি ও স্বভাবাদি অনেক পরিমাণে কবি বর সেলির ন্যায় ছিল । কিন্তু পরিণত বয়সে র্তাহার চিন্তাশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তি যেরূপ উদ্দীপিত ও পরিমার্জিত হইয়াছিল, তাহার সহিত তুলনায় সেলিকে একটা বালক বলিলেও অসঙ্গত হয় না। উচ্চ চিন্তা বিষয়ে ও দৈনন্দিন কাৰ্য্যকলাপে তাহার সুতীক্ষ বুদ্ধি পদার্থ নিচয়ের অস্তুৰ্ব্বেধ করিতে পারিত । কার্য্য করণে র্তাহার যেমন ক্ষিপ্ৰকারিতা, তেমনই সুদক্ষতা ছিল। তাহার কল্পনা ও অনুভূতি এত তেজস্বিনী ছিল যে তিনি শিল্প বিদ্যায় অভিনিবিষ্ট হইলে অসাধারণ শিল্পী হইতে পারিতেন । র্তাহার মনের এরূপ তেজস্বিতা ও কোমলত ছিল, এবং তাহার বক্তাশক্তি এতদূর বলবতী ছিল যে তিনি বক্ততা বিষয়ে, অভিনিবিষ্ট হইলে অদ্বিতীয় বাগী হইতে পারিতেন। তিনি মনুষ্যপ্রকৃতি এত গভীররূপে বুঝিতে পারিতেন এবং মনুষ্যের দৈনন্দিন জীবনে র্তাহার এরূপ স্বক্ষদর্শিতা ও প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ছিল, যে স্ত্রীজাতির রাজ্যের শাসনকার্য্যে কোন অধিকার থাকিলে, তিনি এক জন সুপ্রসিদ্ধ শাসনকত্রী হইতে পারিতেন । র্তাহার নিঃস্বাৰ্থ ভাব, র্তাহার হৃদয়ের স্বাভাবিক মনুষ্যপ্রেম হইতে উৎপন্ন হইয়াছিল, কৰ্ত্তব্যাবলীর উপদেশের ফল ছিল না। র্তাহার পরদুঃখামুভাবকতা শক্তি এতদূর বলবতী ছিল, তাহার কল্পনা এরূপ তেজস্বিনী ছিল, যে র্তাহার অন্তর দুঃখীর অস্তরের সহিত মিশাইয়া যাইত এবং তিনি অনেক সময় পরের দুঃখে অধিকতর বর্ণবিন্যাস করিয়া বদান্যতা ও সহানুভূতির সীমা অতিক্রম করিতেন।
