পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গান্ধীজী ও নেতাজী
৭৫

ইংরেজের বজ্রমুষ্টি হইতে গ্রীবা মুক্ত করিবার উপায় চিন্তা করিতে লাগিল। ততদিনে ইংরেজ তাহার পল্লীজীবনে হানা দিয়া শুধুই শাকান্ন হরণ করে নাই, সে তাহার সেই শেষ আশ্রয় সমাজটাকেও ভাঙ্গিয়া দিয়াছে। তখন বড় ভয়, বড় বেদনা জাগিল, গুরু ইংরেজের নিকটেই সে যাহা শিখিয়াছিল তাহাকেই দীপ-বর্ত্তি করিয়া সে এইবার আপন দেশের, আপন জাতির ইতিহাস উল্টাইতে লাগিল—অতীতের সেই ভগ্নপ্রাসাদ ও জীর্ণ-কুটীরে যাহা-কিছু কুড়াইয়া পাইল, তাহাই সেই নূতন আলোকে নূতন করিয়া পাঠ করিল। বেদান্ত ও উপনিষৎ, বুদ্ধ ও কৃষ্ণ, ব্যাস ও শঙ্কর―তাহার মনে এক নূতন ভাষায় কথা কহিতে লাগিল, সেই সনাতনতত্ত্বই যুগের ছন্দে নূতন বাণী রচনা করিল। সে আবাব ভাগীরথীতীরে পিতৃতর্পণ করিতে বসিল। তাহার আসন নির্দ্দেশ করিলেন বঙ্কিম, তিনি নবযুগের মধ্যে প্রাচীন ও মধ্যযুগের ভারতবর্ষকে স্থাপনা করিয়া এক নূতন তত্ত্বের ইঙ্গিত করিলেন―তাহা জৈন নয়, বৌদ্ধ নয়, বেদান্ত নয়, বৈষ্ণবও নয়, সে এক নূতন শক্তিমন্ত্র, তাহার দেবতা―মানুষ, এবং ধর্ম্ম―পৌরুষ। ইহার পর, ভারতের আত্মাই যেন শরীরী হইয়া ঐ ভাগীরথীতীরেই অবতরণ করিল, এবং এক মহাবীর্য্যবান আধার সংগ্রহ করিয়া তাহার কর্ণে সেই মন্ত্র দিল, যাহাতে সর্ব্বভয় নিবারণ হয়,―সেই মন্ত্র সর্ব্ববন্ধন-মোচনের মন্ত্র, অথচ বৈরাগ্যের ত্যাগমন্ত্র বা শূন্যবাদ নয়; তাহা স্বাধীন আত্মার স্বাধিকার