পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গান্ধীজী ও নেতাজী
৭৯

পিপাসাও তাহার স্বাস্থ্য নয়, ব্যাধি,―সে ব্যাধিও ইংরেজের সৃষ্টি; তাই আর সকলের সহিত তাহার রফা চলিতে পারে, বাঙালীর সঙ্গে কোন রফা চলিবে না। সে যাহা হারাইয়াছে ভারতের আর কেহ তাহা হারায় নাই; আর সকলে ধন হারাইয়াছে, বাণিজ্যের মুনাফা হারাইয়াছে, রাজসম্মান বা প্রভুত্বের গৌরব হারাইয়াছে; বাঙালী হারাইছে―তাহার শান্তিময় অনাড়ম্বর জীবনের সেই উগ্রতাহীন মাদকতাহীন স্বাধীনতা―তাহার সেই নিঃশ্বাস-বায়ু। ইংরেজও তাহা বুঝিয়াছে—এ জাতিকে সে বিশেষরূপেই জানে, তাই ইহার জন্য তাহাকে একটা বিশেষ ব্যবস্থাও করিতে হইয়াছে। কংগ্রেসী-ভারতও বাঙালীর এই ধর্ম্মকে বিধর্ম্ম বলিয়াই মনে করে, তাই সে তাহাকে বশ করিতে না পারিয়া অবশেষে বর্জ্জন করিয়াছে।

 এই হৃত-স্বাধীনতার বেদনা তাহার মগ্ন-চৈতন্যের মধ্যে গুমরিয়া উঠিয়াছিল বলিয়াই, বাঙালী ভারতে এক নবধর্ম্মের প্রচারক হইয়াছিল; সেই বেদনা বঙ্কিম-বিবেকানন্দের সাধনায় যে মানসী-মূর্ত্তিতে প্রকাশ পাইয়াছিল, তাহাই নেতাজী সুভাষচন্দ্রে বাস্তব রূপ পরিগ্রহ করিয়াছে। নেতাজী সুভাষচন্দ্র কেবল যুদ্ধ-নায়ক নেতা নহেন, ইংরেজের সহিত যুদ্ধ এবং সেই যুদ্ধে জয়লাভই তাঁহাব সাধনার শেষ ফল নহে; তিনি কেবল শত্রুঞ্জয় নহেন, তিনি আরও অনেক বড়—তিনি নিজে মৃত্যুঞ্জয় হইয়া এই জাতির মৃত্যুভয়হারী; যে-বীর্য্যবলে, বিনতানন্দন গরুড়ের মত, স্বর্গ হইতে স্বাধীনতার অমৃত-সোম হরণ করা যায়―তিনি